পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঘ বললে, ‘তবে কনে কোথায়? লোকজন কোথায়?’

শিয়াল বললে, কনে তো রাজার মেয়ে! লোকজন তাকে আনতে গেছে।’

বাঘ বললে, তুমি বাঁধা কেন?’

শিয়াল বললে, আমি কিনা বিয়ে করতে চাইনি, তাই আমাকে বেঁধে রেখে চলে গেছে, পাছে আমি পালাই।’

বাঘ বললে, ‘সত্যি নাকি। তুমি বিয়ে করতে চাচ্ছ না?’

শিয়াল বললে, ‘সত্যি মামা। আমার বিয়ে করতে একটুও ইচ্ছে হচ্ছে না।’

তা শুনে বাঘ ভারি ব্যস্ত হয়ে বললে, ‘তবে তোমার জায়গায় আমাকে বেঁধে রেখে তুমি চলে যাও না।’

শিয়াল বললে, ‘এক্ষুণি। তুমি আমার বাঁধন খুলে দাও, তারপর আমি তোমাকে বেঁধে রেখে যাচ্ছি।’

তখন বাঘের আনন্দ আর দেখে কে। সে অমনি এসে শিয়ালের বাঁধন খুলে দিল। শিয়ালও আর দেরি না করে, তাকে ভালো মতো খোঁটায় বেঁধে বললে, ‘এক কথা, মামা। তোমার শালারা এসে তোমার সঙ্গে হাসি-তামাশা করবে। তাতে তুমি চটো না যেন?’

বাঘ বললে, ‘আরে না। আমি তাতে চটি? আমি বুঝি এতই বোকা।’ এ কথায় শিয়াল হাসতে-হাসতে চলে গেল। বাঘ ভাবতে লাগল, কখন কনে নিয়ে আসবে।

সকাল বেলায় রাখালের দল এসে উপস্থিত হল। বাঘ তাদের দেখে ভাবল, ‘ঐ আমার শালারা এসেছে। এক্ষুণি হয়তো ঠাট্টা করবে। আর তাহলে আমাকেও খুব হাসতে হবে।’

রাখালেরা এসেছিল শিয়াল মারতে। এসে দেখলে, বাঘ বসে আছে। অমনি তো ভারি একটা হৈ-চৈ পড়ে গেল। কেউ-কেউ পালাতে চায়, কেউ-কেউ তাদের থামিয়ে বললে, ‘আরে, বাঁধা রয়েছে দেখছিস না? ভয় কি? কুড়ুল, খন্তা, বল্লম নিয়ে আয়।’

তখন একজন একটা মস্ত ইট এনে বাঘের গায়ে ছুঁড়ে মারল।

তাতে বাঘ বললে, ‘হীঃ, হীঃ, হিহি, হিহি।’

আর একজন একটা বাঁশ দিয়ে গুঁতো মারলে।’

তাতে বাঘ বললে, ‘হীঃ, হীঃ, হিহি, হিহি।’

আর একজন একটা বল্লম দিয়ে খোঁচা মারলে।

তাতে বাঘ বললে, ‘উঃ হূ, হুঃ। হোহো হোহো হোহো।-বুঝেছি তোমরা আমার শালা।’

আবার তারা বল্লমের খোঁচা মারলে।

তাতে বাঘ বেজায় রেগে বললে, ‘দুত্তোর! এমন ছাই বিয়ে আমি করব না।’ বলে সে