ছাড়িয়ে মরার মতো পড়ে রইল। তারপর শিয়াল আর শিয়ালিনী কচ্ছপ খেতে এসে দেখল, কুমির কেমন হয়ে পড়ে আছে! তখন শিয়ালিনী বললে, ‘মরে গেছে! চল খাইগে! শিয়াল বললে, ‘রোস একটু দেখে নিই।’ এই বলে সে কুমিরের আর একটু কাছে গিয়ে বলতে লাগল, ‘না! এটা দেখছি বড্ড বেশী মরে গেছে! অত বেশী মরাটা আমরা খাই না। যেগুলো একটু-আধটু নড়ে-চড়ে, আমরা সেগুলো খাই।’
তা শুনে কুমির ভাবলে, ‘একটু নড়ি-চড়ি, নইলে খেতে আসবে না।’ এই মনে করে কুমির তার লেজের আগাটুকু নাড়তে লাগল। তা দেখে শিয়াল হেসে বললে, ‘ঐ দেখ, লেজ নাড়ছে! তুমি তো বলেছিলে, মরে গেছে!’ তারপর আর কি তারা সেখানে দাঁড়ায়! তখন কুমির বললে, ‘বড্ড ফাঁকি দিলে তো! আচ্ছা এবারে দেখাব!’
একটা জায়গায় শিয়াল রোজ জল খেতে আসত! কুমির তা দেখতে পেয়ে সেখানে গিয়ে লুকিয়ে রইল। ভাবল, শিয়াল জল খেতে এলেই ধরে খাবে। সেদিন শিয়াল এসে দেখল, সেখানে একটাও মাছ নেই। অন্য দিন ঢের মাছ চলা-ফেরা করে। শিয়াল ভাবলে, ‘ভালো রে ভালো, আজ সব মাছ গেল কোথায়? বুঝেছি, এখানে কুমির আছে!’ তখন সে বললে, ‘এখানকার জলটা বেজায় পরিস্কার। একটু ঘোলা না হলে কি খাওয়া যায়? চল শিয়ালিনী, আর -এক জায়গায় যাই।’ এ কথা শুনেই কুমির তাড়াতাড়ি সেখানকার জল ঘোলা করতে আরম্ভ করলে। তা দেকে শিয়াল হাসতে হাসতে ছুটে পালিয়েছে!
আর একদিন শিয়াল এসেছে কাঁকড়া খেতে। কুমির তার আগেই সেখানে চুপ করে বসে আছে। শিয়াল তা টের পেয়ে বলল, ‘এখানে কাঁকড়া নেই, থাকলে দু-একটা ভাসত।’
অমনি কুমির তার লেজের আগাটুকু ভাসিয়ে দিল। কাজেই শিয়াল আর জলে নামল না।
অমনি করে বারবার শিয়ালের কাছে ঠকে গিয়ে, শেষে কুমিরের ভারি লজ্জা হল। তখন সে আর কি করে মুখ দেখাবে। কাজেই সে তার ঘরের ভিতরে গিয়ে বসে রইল।