শিয়ালের কথায় রাজামশাই ভারি ভাবনায় পড়লেন।
ভেবে-চিন্তে শেষে তিনি বললেন, ‘তাই তো! ঠিক বলেছ! গাছের আবার কি করে ছানা হবে? সে বেটা নিশ্চয় তবে নিশ্চয় চোর।
তখনই হুকুম হল, ‘আন তো রে সেই চোর বেটাকে বেঁধে!’
অমনি দশ পেয়াদা গিয়ে চোরকে বেঁধে আনলে। আনতেই রাজামশাই বললেন, ‘মার বেটাকে পঞ্চাশ জুতো!’
বলতেই বলতেই পেয়াদারা তাদের নাগরা জুতো খুলে চটাশ-চটাশ চোরের পিঠে মারতে লাগাল। সে বেটা পঁচিশ জুতো খেয়ে চেঁচিয়ে বললে, ‘গেলুম গেলুম! আমি ঘোড়া এনে দিচ্ছি। আর এমন কাজ কখনো করব না!’ কিন্ত তার কথা আর তখন কে শোনে! পঞ্চাশ জুতো মারা হলে রাজা বললেন, ‘শিগগির ঘোড়া এনে দে, নইলে আরো পঞ্চাশ জুতো!’
চোর তাড়াতাড়ি ছুটে গিয়ে ঘোড়া এনে দিল। তারপর তার নিজ হাতে নাক-কান মলিয়ে মাথা চেঁছে, তাতে ঘোল ঢেলে হতভাগাকে দেশ থেকে দূর করে দেওয়া হল। সওদাগর তার ঘোড়া পেয়ে শিয়ালকে আশীর্বাদ করতে লাগল।
বাঘখেকো শিয়ালের ছানা
এক শিয়াল আর এক শিয়ালিনী ছিল। তাদের তিনটি ছানা ছিল, কিন্ত থাকবার জায়গা ছিল না।
তারা ভাবলে, ‘ছানাগুলোকে এখন কোথায় রাখি? একটা গর্ত না হলে তো এরা বৃষ্টিতে ভিজে মারা যাবে।’ তখন তারা অনেক খুঁজে একটা গর্ত বার করলে, কিন্ত গর্তের চারধারে দেখলে, খালি বাঘের পায়ের দাগ! তা দেখে শিয়ালিনী বললে, ‘ওগো এটা যে বাঘের গর্ত। এর ভিতরে কি করে থাকবে।?’
শিয়াল বলল, ‘এত খুঁজেও তো আর গর্ত পাওয়া গেল না। এখানেই থাকতে হবে।’
শিয়ালিনী বললে, ‘বাঘ যদি আসে, তখন কি হবে?’
শিয়াল বললে, ‘তখন তুমি খুব করে ছানাগুলির গায়ে চিমটি কাটবে। তাতে তারা চেঁচাবে, আর আমি জিজ্ঞেস করব-ওরা কাঁদছে কেন? তখন তুমি বলবে-‘ওরা বাঘ খেতে চায়।’