শিয়াল কিনা পণ্ডিত মানুষ, তাই সে আখকে বলে ‘ইক্ষু’, ক্ষেতকে বলে ‘ক্ষেত্র’, লাঠিকে বলে ‘দণ্ড’,।
ভিমরুলের চাক দেখে সে বললে, ‘আহা ইক্ষুর কি চমৎকার ফল! খেতে না জানি কতই মিষ্টি হবে?’ এই মনে করে যেই সে ভিমরুলের চাক খেতে গিয়েছে, অমনি সব ভিমরুল বেরিয়ে কি-মজাটাই তাকে দেখাতে লাগল! শিয়াল তো প্রাণের ভয়ে খালি ছোটে, আর বলে, ‘ইক্ষুর ক্ষেত্রে আর যাব না!’
খানিক বাদে ভিমরুলগুলো তাকে ছেড়ে গেল। তখন সে ভাবলে, ‘ক্ষেত্রে তো রোজই যাই, তাতে কিছু হয় না। ফল খেতে গিয়েই আমার বিপদ হল। তবে আর ক্ষেত্রে যাব না কেন? ফল না খেলেই হল।’ এই ভেবে সে বলতে লাগল, ‘যদি ইক্ষুর ক্ষেত্রে যাব, ইক্ষুর ফল আর না খাব!’ দুদিন সে খালি এ কথাই বলে।
তারপর যখন বেদনা একটু কমে এল, তখন সে ভাবলে, ‘ঐ ফলটার ভিতর পোকা ছিল, তারাই আমাকে কামড়েছে। আগে যদি ফলটাতে নাড়া দিতুম তবে পোকাগুলি বেরিয়ে যেত। তারপর ফল খেতে কোনো কষ্ট হত না! আহা, সে ফল খেতে না জানি কতই মিষ্টি। তবে আর ফল খাব না কেন? খাবার আগে পোকা তাড়িয়ে দিলেই হবে।’ এই ভেবে সে বলতে লাগল, ‘যদি ইক্ষুর ফল খাব, আগে দণ্ড দিয়ে নাড়া দিব!’ বলতে-বলতে আখের ক্ষেতে গিয়ে সে তো লাঠি দিয়ে নাড়া দিয়েছে। অমনি আর যাবে কোথায়! ভিমরুলের দল এসে তাকে কামড়িয়ে আধমরা করে তবে ছাড়ল। সেই থেকে সে আর ইক্ষুর ফল খেত না।
হাতির ভিতরে শিয়াল
রাজার যে হাতিটা তাঁর আর সকল হাতির চেয়ে ভালো আর বড় দেখতে সুন্দর, সেইটে তাঁর ‘পাটহস্তী’।
সেই হাতিতে চড়ে রাজামশাই চলাফেরা করেন, আর তাকে খুব ভালবাসেন।
একদিন রাজার পাটহস্তী মরে গেল। রাজা অনেকক্ষণ ভারি দুঃখ করলেন, শেষে বললেন, ‘ওটাকে ফেলে দিয়ে এস।’
তখন সেই হাতির পায়ে বড়-বড় দড়ি বেঁধে পাঁচশো লোক টেনে তাকে মাঠে ফেলে দিয়ে এল।