মেরে রেখে এসেছি।’ বাঘিনী আর তার ছানাগুলো ছুটে গিয়ে দেখল, সত্যি মস্ত এক মোষ পড়ে আছে। তারা চারজনে মিলে অনেক কষ্টে সেটাকে টেনে আনলে, আর ভাবলে, ‘ঈস! মজন্তালী মশায়ের গায়ে কি ভয়ানক জোর!’
আর একদিন তারা মজন্তালীকে বললে, ‘মজন্তালী মশাই, এ বনে বড়বড় হাতি আর গণ্ডার আছে। চলুন একদিন সেইগুলো মারতে যাই।’
একথা শুনে মজন্তালী বললে, ‘তাই তো, হাতি গণ্ডার মারব না তো মারব কি? চল আজই যাই।’
বলে সে তখুনি সকলকে নিয়ে হাতি আর গণ্ডার মারতে চলল। যেতে-যেতে বাঘিনী তাকে জিগগেস করলে, ‘মজন্তালী মশাই, আপনি খাপে থাকবেন, না ঝাঁপে থাকবেন? খাপে থাকবার মানে কি? না-জন্তু এলে তাকে ধরে মারবার জন্য চুপ করে গুঁড়ি মেরে বসে থাকা। আর ঝাঁপে থাকার মানে হচ্ছে, বনের ভিতরে গিয়ে ঝাঁপাঝাঁপি করে জন্তু তাড়িয়ে আনা।’
মজন্তালী ভাবলে, ‘আমার তাড়ায় আর কোন জন্তু ভয় পাবে!’ তাই সে বললে, ‘আমি ঝাঁপিয়ে যে সব জন্তু পাঠাব, তা কি তোরা মারতে পারবি? তোরা ঝাঁপে যা, আমি খাপে থাকি।’
বাঘিনী বললে, ‘তাই তো, সে সব ভয়ানক জন্তু কি আমরা মারতে পারব? চল বাছারা, আমরা ঝাঁপে যাই।’
এই বলে বাঘিনী তার ছানাগুলোকে নিয়ে বনের অন্য ধারে গিয়ে ভয়ানক ‘হাল্লুম-হাল্লুম’ করে জানোয়ারদের তাড়াতে লাগল। মজন্তালী জানোয়ারদের ডাক শুনে, একটা গাছের তলায় বসে ভয়ে কাঁপতে লাগল।
খানিক বাদে একটা সজারু সড়-সড় করে সেই দিক পানে ছুটে এসেছে, আর মজন্তালী তাকে দেখে ‘মাগো’ বলে সেই গাছের একটা শিকড়ের তলায় গিয়ে লুকিয়েছে, এমন সময় একটা হাতি সেইখান দিয়ে চলে গেল। সেই হাতির একটা পায়ের এক পাশ সেই শিকড়ের উপরে পড়েছিল, তাতেই বেচারা মজন্তালীর পেট ফেটে গিয়ে, বেচারার প্রাণ যায় আর কি!
অনেকক্ষন ঝাঁপাঝঁপি করে বাঘেরা ভাবল, ‘মজন্তালী মশাই না জানি এতক্ষনে কত জন্তু মেরেছেন, চল একবার দেখে আসি।’ তারা এসে মজন্তালীর দশা দেখে বললে, ‘হায়-হায়! মজন্তালী মশায়ের এ কি হল?’