পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মজন্তালী বললে, ‘আর কি হবে? তোরা যে সব ছোট-ছোট জানোয়ার পাঠিয়েছিলি, দেখে হাসতে-হাসতে আমার পেটই ফেটে গিয়েছে!’

এই বলে মজন্তালী মরে গেল।


পিঁপড়ে আর হাতি আর বামুনের চাকর

এক পিঁপড়ে ছিল আর তার পিঁপড়ী ছিল, আর তাদের দুজনের মধ্যে ভারি ভাব ছিল। একদিন পিঁপড়ী বললে, ‘দেখ পিঁপড়ে, আমি যদি তোমার আগে মরি, তবে কিন্তু তুমি আমাকে গঙ্গায় নিয়ে ফেলবে। কেমন পিঁপড়ে, ফেলবে তো?’

পিঁপড়ে বললে, ‘হ্যাঁ পিঁপড়ী, অবশ্যি ফেলব। আর আমি যদি তোমার আগে মরি, তবে কিন্ত তুমি আমাকে গঙ্গায় নিয়ে ফেলবে। কেমন পিঁপড়ী, ফেলবে তো?’

পিঁপড়ী বললে, ‘তা আর বলতে, অবশ্যি ফেলব।’

এমনি দুজনের কথাবার্তা হয়েছে, তারপর একদিন পিঁপড়ী মরে গেল। তখন পিঁপড়ে অনেক কাঁদল, তারপর ভাবল, ‘এখন পিঁপড়ীকে তো নিয়ে গঙ্গায় ফেলতে হয়।’

এই ভেবে সে পিঁপড়ীকে কাঁধে করে নিয়ে গঙ্গায় চলল। সেখান থেকে গঙ্গা অনেক দূরে, যেতে অনেক দিন লাগে। পিঁপড়ে পিঁপড়ীকে কাঁধে নিয়ে সমস্ত দিন চলল। তারপর যখন সন্ধ্যা হল, তখন সে দেখল যে রাজার হাতিশালে এসেছে-সেই যেখানে তাঁর সব হাতি থাকে। পিঁপড়ের বড্ড পরিশ্রম হয়েছিল, তাই সে পিঁপড়ীকে নিয়ে সেইখানে বসে বিশ্রাম করতে লাগল। সেইখানে মস্ত একটা হাতি বাঁধা ছিল, সেটা রাজার পাটহস্তী। হাতিটা শুঁড় নাড়ছিল, আর ফোঁস-ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলছিল, আর তাতে পিঁপড়ীকে সুদ্ধ পিঁপড়েকে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। কাজেই পিঁপড়ে রেগে বললে, ‘খবরদার!’ হাতি কিন্তু তা শুনতে পেল না। সে আবার নিঃশ্বাস ফেললে, আবার তাতে পিঁপড়েকে উড়িয়ে নিল। তাই পিঁপড়ে আরো রেগে খুব চেঁচিয়ে বলল, ‘এইয়ো! খবরদার! ভালো হবে না কিন্ত! হতভাগা, পাজী!’

হাতি ভাবলে, ‘ভালোরে ভালো, ওখান থেকে কে আমায় চিঁ-চিঁ করে গাল দিচ্ছে? আমি তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।’ এই বলে সে তার পা দিয়ে সে জায়গাটা ঘষে দিলে!