পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৯২
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

পেটটার কোনো কাজ নাই ত,
ওরি জন্য কত কষ্ট সহিয়া
মুখে তুলে ভাত দিই বহিয়া।”
পা বলিছে, “চড়ে মোর ঘাড়ে
ব্যথা করে দিল মোর হাড়ে,
পেট যায় নেমন্তন্নে
আমি হেঁটে মরি তার জন্যে।
আচ্ছা ভাই বল দেখি তোরা,
আমি কি রে হই ওর ঘোড়া?”
শুনে সবাই রেগে বলে ভাবি “পেটেব সঙ্গে কর সবে আড়ি
সবাই খবরদাব ওর সাথে আর কেউ কর নাকো কারবার
গলা গিলবে না, ঠোঁট খুলবে না, দিবে দাঁত কপাটি,
হুড়কা আঁটি খাটাখাটি হাঁটাহাঁটি যাবে মিটি।”
এইভাবে দিন গেল দুই তিন, পেটে নাহি দানাপানি।
সবে বলে, “ভাই, বল নাহি পাই, মোদের কি হল জানি।
ঐ জিব দুষ্ট সব কৈল নষ্ট মন্দ কথা বলে কানে।”
হেন মতে সবে কাঁদে উচ্চ রবে গালি দিয়া রসনারে।
মন্দ কথা ভাই কহিতে না চাই, নাহি চাহি শুনিবারে।

পাখির গান

কত পাখি আছে, তাহা কব মোর কাছে
আহা, কত মত সাজে তারা ফেরে ধরা মাঝে।
তারা বলে কত বুলি, তারা করে কত খেলা,
দুখ নাহি কারো মনে, কারো কাজে নাহি হেলা।
নাচে খঞ্জন বাটে মাঠে, আর কোকিল গাহে ডালে,
আর কিবা মনে করে কাকা বসে আসি চালে।
মুনিঠাকুরেবি মত বক থাকে ঝিম ধরে,
মাছ এলে মুখ মেলে তাবে গেলে কপ করে।
কহে হুতোমেরে প্যাঁচা, ‘মুই বলি, শোন চাচা,
এই যে হাঁড়ি মুখে দাড়ি, এর বাহার বড় ভারি!’
শ্যামা, বুলবুল গাহে বনে, মিলি দোয়েলের সনে,
এসে চড়াই ঘরে বড়াই করে শঙ্কা নাহি মনে।
বলে শঙ্খচিল কেন যত ঘটিবাটি পাবে
আর গোদা বেটা কেন খালি ঘাড়ে লাথি খাবে?