কহ সে বা কোন পাখি যার বৌ না কহে কথা?
কিবা নামটি যার চোখে বড় হায় ব্যথা?
বটে চালাক বড় শালিক, রাখে দুনিয়ার খবর,
আর ময়না কাকাতুয়া তারা কথায় বড় জবর।
তার গলে দোলে ঝোল্লা, গায়ে কালো আলখাল্লা,
রূপের কিবা হয় জেল্লা, হাই তুল্লে হাড়গিল্লা!
আছে গগনবেড়, গৃধিনী, শাঁচানি, শকুনি,
পায়রা, ঘুঘু, ফিঙ্গা, পানকৌড়ি মাছরাঙ্গা
কাঠঠোক্রা, কাদাখোঁচা, হরবোলা, হাঁড়িচাচা,
টিয়া, টুনটুনি, টিঠিপাখি—কহ কত আর বাকি!
গ্রীষ্মের গান
বড় গরম! ভারি গরম! ঠাণ্ডা সরবৎ আনো!
হাত পা কেমন করছে ছন্ছন্! জোরে পাখা টানো!
খালে বিলে নাই রে জল, সব শুকিয়ে গেল!
তাতে মাটি ফাটে কাঠ, গ্রীষ্ম ঐ রে এল!
নৌকা নাহি চলে আর হায় রে টানাটানি।
মাঝি মাল্লা বলে ‘আল্লা! গাঙ্গে নাইকো পানি।’
বুনো হাঁস বলে, ‘মোর মাথা গেল তেতে।
এই বেলা সেই ঠাণ্ডা দেশে পলাই উত্তরেতে।’
মহিষ গরু যত ছিল, গেল রোগা হয়ে—
দেশে নাহি মিলে ঘাস, বাঁচে কিবা খেয়ে।
ঠাণ্ডা মাটি আগুন হল, তেতে গেল হাওয়া।
ঘরে বসে রাখি প্রাণ, রইল পথে যাওয়া।
হাঁ করিয়া থাকে শালিক বসে মনোদুঃখে—
শুকায়েছে গলা তার কথা নাহি মুখে!
গ্রীষ্মে লোকে বলে ‘ভাই, কেন তুমি এলে?’
গ্রীষ্ম বলে ‘এনু তাই আম খেতে পেলে!
দুটো মাস থাক এই গরমেরে সয়ে—
ফল শস্য পাকে যদি, খাবে খুশি হয়ে।’