অবসরকালে পড়িয়াবালক-বালিকাগণশিক্ষা এবং আনন্দ লাভ করবে, এই আশায় এই পুস্তকখানি লিখিত হইল। বিষয়টি বৈজ্ঞানিক হইলেও, সে হিসাবে তাহার কোনরূপ চর্চার চেষ্টা হয় নাই; বালক বালিকাদিগকে প্রাচীনকালের কাহিনী শুনাইবাব জন্য এই পুস্তুক লেখা,বিজ্ঞানের কথা বলাই ইহার উদ্দেশ্য নহে। ছেলেদিগকে যেরূপ করিয়া জানোয়ারের গল্প শুনাইলে তাহারা আমোদ পায়, সেইরূপ সহজ কথায় সরলভাবে এই পুস্তকখানিলিখিতে চেষ্টা করিয়াছি। সুতরাং সকল কথাই বিজ্ঞানের তুলাদণ্ডে মপিয়া বলা সম্ভব হয় নাই, আর তাহার আবশ্যকও বোধহয় নাই। আশাকরি, এ সম্বন্ধে ত্রুটি অল্পই হইয়াছে এবং আমার উদ্দেশ্যের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া সকলে তাহাও মার্জনা করবেন।
এই পুস্তকে ১৭ খান বড়-বড় ছবি আছে। এই সকল ছবি এই পুস্তকের জন্যই বিশেষভাবে অঙ্কিত হইয়াছিল;ইহাদের একটিও ইংরাজি পুস্তকের ছবির নকল নহে। পুস্তকের ভাষা ও বিষয় সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছ এই ছবিগুলিব সম্বন্ধেও আমার তাহই বক্তবা। ছবিগুলি আঁকিবার সময় উহাদিগকে যথাসম্ভব নির্দোষ করিতে যতদূর চেষ্টা ছিল, শিশুদিগের হিসাবে সুন্দর করিতে তদপেক্ষা অধিক চেষ্টা হইয়াছে। দুঃখেব বিষয় যত ভাল করিয়া আঁকা উচিত ছিল, তাহ পারি নাই। তথাপি আশা কবি, এই সকল ছবিতে বৈজ্ঞানিক হিসাবে গুরুতর ক্রটি লক্ষিত হইবে না,কারণ এই ছবিগুলি দেখিয়া একজন উচ্চপদস্থ বৈজ্ঞানিক পণ্ডিত সন্তোষ প্রকাশ করিয়াছেন।
বর্ণিত জন্তুগুলির ইংরাজি নামই রাখিয়াছি। এই সকল নামকে বাংলায় অনুবাদ করিয়া দেওয়া উচিত ছিল কিনা জানি না। আমি ইংরাজি নামগুলির বাংলা অর্থ বলিয়া দিয়াই যথেষ্ট মনে করিয়াছি। ইহাদের যথোচিত বাংলা পরিভাষা রচনা করা, আমার সাধ্যের অতীত। আর তাহা আমাদের প্রয়োজনেরও বহির্ভূত; কারণ, এখনি গল্পের বই—বৈজ্ঞানিক পাঠ্য পুস্তক নহে।
কলিকাতার জাদুঘরের কর্তৃপক্ষ অনুগ্রহ কবিয়া এই পুস্তকে জাদুঘরে রক্ষিত কোন কোন দ্রব্যের ছবি মুদ্রিত করতে অনুমতি দিয়াছেন। এজন, এবং এতদুপলক্ষে আমি তাহদের নিকট যে সরল সদ্ব্যবহার প্রাপ্ত হইয়াছি, তজ্জন্য বিশেষ কৃতজ্ঞ রহিলাম।
সেকালের কথা প্রথমে মুকুল’ নামক মাসিক পত্রিকায় বাহির হয়। তাহাকেই কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত করিয়া এই পুস্তক হইয়াছে।মুকুলে যেসকল ছবি বাহির হইয়াছিল,তাহ এ পুস্তকে গ্রহণ করা হয় নাইইহার ছবিগুলি সমস্তইনূতন।