ছেলেদের রামায়ণ brጫ আশীৰ্বাদ করিলেন; আর সকলেই বলিল, “তোমাদের ভাল হউক!’ খানিক দূরে গিয়া বিশ্বামিত্র রামকে বলিলেন, বাছ রাম, ঐ সরযুর জলে মুখ ধুইয়া আইস। আমি তোমাকে বলা’ আর "অতি-বলা’ নামক মন্ত্র দিব। এ মন্ত্র জানিলে তোমার পরিশ্রম বা অসুখ হইবে না, কেহ তোমার কোন ক্ষতি করিতে পরিবে না, আর যুদ্ধে সকলেই তোমার কাছে হারিয়া যাইবে।” রাম নদীতে মুখ ধুইয়া মুনির নিকট মন্ত্ৰ লইলেন। তখন তাহার মনে হইল, যেন তাহার শরীরের তেজ অনেক বাড়িয়া গিয়াছে। রাত্রি হইলে তিন জনে সরযুর ধারে ঘাসের উপর ঘুমাইয়া রহিলেন। সকালবেলা উঠিয়া আবার পথ চলিতে লাগিলেন। সেদিনকার রাত্রি কাটিল অঙ্গদেশে মুনিদের আশ্রমে। এইখানে আসিয়া সরযূ নদী গঙ্গাব সহিত মিলিয়াছে। مفه مس - مست. یا به سند حده পরদিন মুনিরা একখানি সুন্দর নৌকা আনিয়া র্তাহাদিগকে গঙ্গা পার করিয়া দিলেন। বাম-লক্ষ্মণেব উপবে পাথব ছুড়িয়া মাবিতে লাগিল ওপারে ভয়ানক বন। সেই বনে তাড়কা নামে একটা রাক্ষসী থাকে। তাহার গায়ে হাজার হাতির জোর। আগে এখানে সুন্দর দেশ ছিল , তাহাতে কতই লোকজন বাস করিত। এই তাড়কা আর তাহার পুত্র মারীচ সেই সকল লোকজনকে খাইযা দেশটি একেবারে নষ্ট করিয়া ফেলিয়াছে। এখন সেখানে ভয়ানক বন, সে বনে মানুষ গেলেই তাড়কা তাহাকে ধরিয়া খায়। বিশ্বামিত্র রামকে বলিলেন, বাছা, রাক্ষসীটাকে মারিতে হইবে।” রাম বলিলেন, “আচ্ছা।’ এই বলিয়া তিনি ধনুকের গুণ ধরিয়া খুব জোরে টঙ্কার দিলেন। ধনুকের গুণ জোরে টানিয়া হঠাৎ ছাড়িয়া দিলে টং করিয়া একটা শব্দ হয়, তাহাকেই বলে টঙ্কার’। রাম ধনুকে এমনি টঙ্কার দিলেন যে, তাহা শুনিয়া বনের জন্তুরা মনে করিল বুঝি সর্বনাশ উপস্থিত। সে শব্দে তাড়কাও প্রথমে চমকিয়া গিয়াছিল। কিন্তু তাহার পরেই সে হাত তুলিয়া, হা করিয়া, ঘোরতর গর্জন করিতে করিতে আসিয়া উপস্থিত। তখন ধূলায় চারিদিক অন্ধকার করিয়া সে রাম-লক্ষ্মণের উপরে পাথর ছুড়িয়া মারিতে লাগিল। কিন্তু রামের বাণের কাছে সে পাথর কিছুই নয়। তিনি পাথর তো আটকাইলেনই, তাহার উপর আবার রাক্ষসীর লম্বা হাতদুটোও কাটিয় ফলিলেন। তবুও কিন্তু সে ছুটিয়া আসিতে ছাড়ে না। তাহ দেখিয়া লক্ষ্মণ তাহার নাক আরকান কাটিয়া দিলেন। তখন সে হঠাৎ কোথায় যে মিলাইয়া গেল, কিছুই বুঝা গেল না। হাত নাই তবুও বড় বড় পাথর ছুড়িয়া মারে, কিন্তু কোথায় আছে দেখা যাইতেছে না। তখন রাম কেবল তাহার শব্দ শুনিয়াই সেই শব্দের দিকে তীর ছুড়িতে লাগিলেন। এমন ভয়ানক তীর ছুড়িতে লাগিলেন যে রাক্ষসী তাহার জীবনে আর কখনও এত তীর খায় নাই।
পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।