পেঙ্গুইনদের মধ্যে আবার কতকগুলি স্কুলমাস্টার থাকে। পেঙ্গুইনদের ছানারা একটু বড় হলে তাদের এই-সব স্কুল মাস্টারের জিম্মা করে দেওয়া হয়। স্কুল মাস্টারদের কাছে নানারকম আদব-কায়দা শিখে তারা দেখতে দেখতে পাকা পেঙ্গুইন হয়ে দাঁড়ায়।
ততদিনে গ্রীষ্মকাল ফুরিয়ে আসে, পেঙ্গুইনেরাও সে বছরের মতো ঘরকন্না শেষ করে আবার শীত পড়বার আগে উত্তরে চলে যাবার জন্য ব্যস্ত হয়।
লড়াইয়ের বেলা
একটা ষণ্ডা আর একটা রোগা লোকে ঝগড়া হচ্ছে। ষণ্ডাটা বলল, “মারব তোকে একলাথি!” রোগাটা বলল, “আমার কি পা নেই?” ষণ্ডা বলল, “বটে? তোর পা দিয়ে তুই কি করবি?”রোগা বলল, “কেন? ছুটে পালাব!” তখন দুজনেরই খুব হাসি পেল, আর মিটমাট হয়ে গেল।
তবে দেখা যাচ্ছে, সকলের বেলায় যুদ্ধের কায়দা এক রকম হয় না। একটা রোগা কুকুর আস্তাকুঁড়ে দাঁড়িয়ে এঁটো পাতা চাটছিল, এরমধ্যে একটা ষণ্ডা কুকুর এসে সেখানে উপস্থিত হয়েছে। তখন যে দুজনায় লড়াই হল, একটি ছেলে তার এইরকম বর্ণনা দিয়েছিল।—ষণ্ডাটা গলা ভার করে বলল, “কুছ্ হ্যা-া-া-া-া-য়?” রোগাটা খেঁকিয়ে বলল, “হে নাই!” অমনি ষণ্ডাটা আর কিছু না বলে রোগটার ঘাড় টিপে ধরল, আর তখন রোগাটা “হ্যায়! হ্যায়! হ্যায়! হ্যায়!” বলে প্রাণপণে চ্যাঁচাতে লাগল। তোমরা যদি কেউ এরকম ঝগড়া স্বচক্ষে দেখে থাক, তবে বুঝতে পারবে, ছেলেটি চমৎকার বর্ণনা দিয়েছে।
নিজেকে বাঁচিয়ে, দুষমনকে মার—এই হোল যুদ্ধের উত্তম কায়দা। মারতে না পার, নিদেন নিজেকে বাঁচিয়ে চল, এ কথাও মন্দ নয়। বেগতিক দেখলে ছুটে পালাবারও একটা দস্তুর আছে। অনেক জন্তু অনেকরকম কায়দা করে নিজেকে শক্রর হাত থেকে বাঁচায়।
কচ্ছপের ক্ষমতা থাকলেও সে তার শক্রকে এমনি বিষম কামড়িয়ে ধরে যে সে কামড় ছাড়ানো বড়ই কঠিন হয়ে ওঠে। আর যখন তার ক্ষমতায় অতটা কুলায় না, তখন নিজের খোলার ভিতরে গলা হাত-পা সবগুটিয়ে নিয়ে চুপ করে বসে থাকে। তখন অনেককেই সেই খোলার কাছে হার মানতে হয়।
এ ফন্দিটা কচ্ছপ ছাড়া আরো কোনো কোনো জন্তুর জানা আছে। তাদের কারও গায়ে কাঁটা, কারও গায়ে শক্ত শক্ত আঁশ। শত্রু এলে তারা হাত পা গুটিয়ে, লেজ মুখ গুঁজে একটি গোলারমতো হয়ে যায়। তখন আর সহজে কেউ তাকে মারতে পারে না। কেন্নো যে টোকা দিলে টাকা হয়ে যায় তা তোমরা সকলেই দেখেছ।
কোনো কোনো জানোয়ার এমন আছে, তারা ভালো করে না লুকিয়েই মনে করে ‘খুব লুকিয়েছি’। উটপাখি অনেক সময় লুকোতে হলে গাছের ঝোপে বা কোনো গর্তে মাথা ঢুকিয়ে থাকে— মনে করে কেউ বুঝি দেখতে পাচ্ছে না।
গাঁধি পোকা দেখেছ? তাকে যদি ধরতে যাও তবে সে তার পিছনে থেকে এমনি ঝাঁঝালো একরকম রস ফুকে দিবে যে তার জ্বালায় তোমার চামড়ায় ফোস্কা পড়ে যায়।
একরকম পোকা আছে, তাকে বলে (Bombardier Beetle) অর্থাৎ কামানবাজ পোকা।