পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৯৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৩০
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

থাকায় সবুজ আলোটা উভয় প্রকার চূর্ণের ভিতর দিয়াই চলিয়া আসিতে পারে, কেহই তাহাকে খাইয়া ফেলেনা। সুতরাং মিশ্রের রঙ সবুজ দেখায়। সেইরূপ লাল চুর্ণ আর সবুজ চূর্ণ মিশাইয়া আমরা একটা ধুঁয়ার মতন রঙ পাই। তাহাতেই মনে করি, বুঝি লাল আলো আর সবুজ আলো মিশিয়াও ঐ রঙই হইবে। কিন্তু লাল আলো আর সবুজ আলো মিশিয়া যে রঙ হয় সে কিরূপ, জান? সে সাদা মতন। অতএব দুই-তিন রঙের চুর্ণ মিশাইয়া সেই রঙের আলো মিশাইয়া ফেলিয়াছি, মনে করিলে চলিবে না।

আমরা এতক্ষণ যাহা বলিলাম তাহাতে আমাদের বক্তব্য বিষয়টাকে খুব পরিষ্কার করিতে পারিয়াছি এরূপ ভরসা করি না। একটি কথা মনে রাখিতে চেষ্টা করিবে: দুই-তিন প্রকারের চূর্ণ মিশাইলে একের বর্ণের সহিত অন্যের বর্ণের যোগ করা হইল না; উভয়ের সাধারণ অংশটুকু রাখিয়া অবশিষ্ট অংশটুকুকে ধ্বংস করা হইল মাত্র। কারণ, প্রথম যার ভিতর দিয়া আলো আসিল, তার যে রঙ তাহা ছাড়া অন্য সকল প্রকারের আলো সে খাইয়া ফেলিল। অবশিষ্ট আলোটুকু যখন দ্বিতীয় চুর্ণের ভিতর দিয়া গেল সেও তাহাই করিল ইত্যাদি। একটি দৃষ্টান্ত দিই—সিন্দুর লাল, আণ্ট্রামেরিণ পরিষ্কার নীল। সিন্দুরে আল্ট্রামেরিণে মিশাইলে আমাদের হিসাবে বেগুনে রঙ হওয়া উচিত। কিন্তু কাজে দেখি প্রায় কালো রঙ হয়। লাল মূল বর্ণ, নীলে সবুজ এবং ভায়োলেট আছে এই দুয়ের মধ্যে সাধারণ কিছুই নাই, সুতরাং মিশ্রিত জিনিস কালো দেখাইবারই কথা। এখানেও দেখা যাইতেছে যে, আমরা যেরূপ বিশ্বাস করি, তার মতন কাজ হইল না। আমরা লাল রঙের জিনিস এবং নীল রঙের জিনিস অন্য জায়গায় মিশাইয়া বেগুনে পাইয়াছিলাম, তাহার কারণ এই ছিল যে, আমরা তখন যে নীল ব্যবহার করিয়াছিলাম তাহা বিশুদ্ধ নীল ছিল না, তাহাতে লালের অংশ কিছু ছিল। সুতরাং সেই লালের আভা দেখিয়া আমরা ভ্রমে পড়িয়াছিলাম। পণ্ডিতেরা এইরূপ অনেক শেষে স্থির করিয়াছেন যে, আমরা সচরাচর যাহা ভাবি তাহা নয়। বাস্তবিক লাল এবং ভায়োলেটই মূল রঙ।

 (Deschanel's Natural Philosophy নামক গ্রন্থের বর্ণ বিষয়ক পরিচ্ছেদে ইহার সবিস্তর বর্ণনা আছে)


পূজার ছুটির আমোদ

 বিদেশী পাচক অনেকেই পূজার ছুটিতে বাড়ি চলিলেন। এই ছুটিতে অনেকেই অনেক প্রকারের আমোদ করবেন। নূতন রকমের আমোদ দেখিবার জন্য সকলেই আগ্রহ প্রকাশ করে। একখানি ইংরাজি বই পড়িয়া যেসব নূতন আমোদের কথা এবারে শিখিয়াছি তাহার কিছু কিছু সংক্ষেপে লিখিতেছি, একবার নিজেরা পরীক্ষা করিয়া দেখিবেন।

 ঘরের মাঝামাঝি একটা পর্দা টাঙাইয়া তাহার একপাশে আলো রাখিয়া তাহাতে আপনারা থাকিবেন। অপর পার্শ্ব অন্ধকার করিয়া তাহাতে কতকগুলি দর্শক ডাকিয়া বসাইবেন। এখন আপনারা আলো এবং পর্দার মাঝখানে দাঁড়াইয়া যেরূপ অঙ্গভঙ্গি করিবেন, পর্দায় তাহার যে ছায়া পড়িবে, তাহাতে তার চেয়ে ঐ সকল অঙ্গভঙ্গি আরো সুন্দর দেখাইবে।

 খুব সরু সুতার দ্বারা একটা পুতুল টাঙাইয়া তাহার পেছনে যতগুলি আলো ধরা যায়,