পাতা:উৎসর্গ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বল্কলে শৈবালে জটে; সুদুর্গম তোমার শিখর
নির্ভয় বিহঙ্গ যত কলোল্লাসে করিছে মুখর।
আসি নরনারীদল তোমার বিপুল বক্ষপটে
নিঃশঙ্ক কুটিরগুলি বাঁধিয়াছে নির্ঝরিণীতটে।
যেদিন উঠিয়াছিলে অগ্নিতেজে স্পর্ধিতে আকাশ-
কম্পমান ভূমণ্ডলে- চন্দ্রসূর্য করিবারে গ্রাস,
সেদিন হে গিরি তব এক সঙ্গী আছিল প্রলয়।
যখনি থেমেছ তুমি, বলিয়াছ ‘আর নয় নয়’,
চারি দিক হতে এল তোমা-’পরে আনন্দনিশ্বাস,
তোমার সমাপ্তি ঘেরি বিস্তারিল বিশ্বের বিশ্বাস।

জোড়াসাঁকো। কলিকাতা ৯ আষাঢ় ১৩১০


২৬

আজি হেরিতেছি আমি হে হিমাদ্রি গভীর নির্জনে,
পাঠকের মত তুমি বসে আছ অচল আসনে;
সনাতন পুঁথিখানি তুলিয়া লয়েছ অঙ্ক-’পরে।
পাষাণের পত্রগুলি খুলিয়া গিয়াছে থরে থরে;
পড়িছে একমনে। ভাঙিল গড়িল কত দেশ,
গেল এল কত যুগ পড়া তব হইল না শেষ।
আলোকের দৃষ্টিপথে এই-যে সহস্র খোলা পাতা
ইহাতে কি লেখা আছে ভব-ভবানীর প্রেমগাথা-
নিরাসক্ত নিরাকাঙ্ক্ষ ধ্যানাতীত মহাযোগীশ্বর
কেমনে দিলেন ধরা সুকোমল দুর্বল সুন্দর

৫২