পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পাহাড়শ্রেণী, ঘন সবুজ তার সামুদেশ। দূরে ‘Governor's pool'-এর কাছে একটা গাছের আঁকাবাক মাথা সবুজ পাহাড়ী চালুর পটভূমিকে দেখা যায়। এ ক’দিনের প্রখর স্থৰ্য্যালোক আর বছরের এ সময়ের বর্ষবাদলের কথা মনে করিয়ে দেয়—স্বৰ্য্যের আলো না থাকলে এসব পাহাড়শ্রেণী, এ পাহাড়ী নদী, এই গাছপালা—এই প্রসারতা এত ভাল লাগত ? এই এখন বসে আছি বাংলোর বারান্দাতে, দূরে দূরে কালাঝোর ও অন্যান্য পাছাড়শ্রেণী অপরাষ্ট্রের পড়ন্ত রোদে কি সুন্দরই না দেখাচ্চে ! দুপুরে মহুলিয়ার পোস্টমাস্ট এসেছিল, কেষ্ট আবার এসেছিল–ওলা বল্পে সেদিন আমরা যে হাতীঝর্ণায় গিয়ে চ খেয়েছিলুম, তার ওদিকে বাকাই বলে গ্রাম আছে, গভীর জঙ্গল তার ওপারে—ধান পাকলে নিত্য হাতীর দল বার ছয় । নাসাড়েরা ও ধারাগিরির পথ এখন নিরাপদ নয়, কেষ্ট বলছিল। সেদিকে এখন জঙ্গলও খুব ঘন, তাছাড়া বড় বাধের ভয় হয়েচে, অনেকগুলো মামুন-গরুকে বাধে নিয়ে৮ে এ বছর। সাতগুড়,মের পথেও বাঘের উপাৰ হয়েছে এবছর। পোস্টমাস্টার বয়ে- আপনার জন্তে জমি রেখে দিলে বিঃ, প্রধান, আর আপনি মোটে এলেন না। নেন যদি, জমি এখনও আছে । বিজয়ার দিন মহুলিয়া যাবো, সেগান থেকে টাটানগর ও টাইবাস । এইমাত্র পাছাড়ের সামদেশে এখানে বলে হালুয়া তৈরী করে চা খাওয়৷ গেল। মাথার ওপর অষ্টমীর চাদ, আকাশে দু'দশট। তারা, সামনে অরণ্যপুস্ত পাহাড়ের অন্ধকার সীমারেখা, দূরে বামদিকে অরণ্য আরও গভীর, " জ্যোৎস্নালোকে পাহাড়, উপত্যক, সামুদেশস্থ বনামী অদ্ভূত হয়েচে দেখতে। আজই পট্টনায়েক বাবু বলেছিল ৪নং shaftএ বাঘ আছে, সেজষ্ঠে সুন্নার পরে আমাদের সকলেরই গা ছমছম করচে। রামধন কাঠ কুড়িয়ে আগুন জালিয়ে রেখেচে পাছে বাঘভালুক আসে সেই ভয়ে। কেবলই মনে পড়তে থাকে আজ মহাষ্টমীর সন্ধ্য, বাংলাদেশের গ্রামে গ্রামে এই সময়টাতে পূজার চণ্ডীমগুপে দেবীর আরতি হচ্চে শঙ্খ ঘণ্ট। রবের মধ্যে, ছেলেমেয়েপ। হাসিমূপে নতুন কাপড় পরে ঘুরচে—আর আমরা সিংহুমের এক নির্জন বন্যজন্তু অধুষিত পাহাড়ের মধ্যে বসে গল্প করছি ও প্রকৃতির শোভা দেখছি।"