পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি বিদ্যায়—কোন অংশে এদের চেয়ে কম তো নয়ই—বরং অনেক বেশী ! ভেবে সত্যিই বড় কষ্ট হয়। সুরমা বস্তুর মুন্দর গান শুনবার সময়ে আরও মনে হ’ল পল্লীগ্রামের সেই সব অভাগিনী মেয়েদের কথা, যারা জীবনে কোন মুখই কোনদিন পেলে না। এমন কত আছে, জীবনে তাদের সঙ্গে কত ভাবে কত পরিচয় । আজ সন্ধ্যায় তাদের সবারই তরুণ মুখ মনে পড়ে আনদের পরিবর্তে গভীর দুঃখ ও সহানুভূতিতে মন ভরে উঠল। আজ সাতভেয়ে তলায় আমাদের বনভোজন গেল ! বনগায়ের আমাদের বন্ধুবান্ধব উকীল মোক্তার সকলেই ছিল, তা ছাড়া সাব রেজিষ্ট্রার ও ডাক্তার। বেলা দশটার সময়ে নৌকো করে আমরা গান করতে করতে নদীপথে চলেচি —পুরনো বনগী ও সিমুল তলার সবাই ভাবচে, এ আবার বাবুদের কি খেয়াল! তারপর বটতলায় গিয়ে মাদুর পেতে বসে আমরা সবাই খুব গল্পগুজব করলুম। আমরা ধূমপান করতে পারিনি কারণ প্রবীনের দল সৰ্ব্বদ কাছে কাছে রয়েচে। সতীশ যায়াকে অনেক কৌশল করে সরিয়ে একটু আমাদের সুবিধে করে নেওয়া গেল। এর আগেও গত পূজার ছুটতে একদিন সন্ত হয়ে তলায় এসে খুড়, খুড়ীম, ন’দি আমরা সবাই বনভোজন করে খেয়ে ছিলুম। এতবড় বট গাছ এখানে আর কোথাও নাই—এক রাজনগরে বট ছাড়া নদীর দু’ধারে এড়াঞ্চির ফুল ফুটে আছে—কিন্তু কুঠার মাঠের ধ শোভ নেই এখানে । রামায়ণে সেই শ্লোকটা মনে পড়ল— সস্তি নদ্যো দণ্ডকে তথা পঞ্চবটী বনে । সরযু বিচ্ছেদ শোকং রাঘবস্তু কথংসহে । পঞ্চবট ও দণ্ডকারণ্যে তো কত নদনদী বর্তমান, কিন্তু সরযু বিরছ দুঃখ কি রামচন্দ্র সহ্য করতে পারেন ? আমার মনে হয় বারাকপুরের ওদিকের বনশোভা নাই এই অঞ্চলে। মাঠে এদিকে চন্তু অত্যন্ত বেশী, পোড়ে জমি কোথায় যে যদৃচ্ছবিস্তৃত বনভূমি গড়ে উঠবে ? অারণ্য প্রকৃতি এখানে মানুষের সংস্পর্শে এসে ভীত, সঙ্কুচিত —র্তার সে উদ্যম স্বাধীনতা নেই।