পাতা:ঊর্ম্মিমুখর.djvu/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উৰ্ম্মিমুখর - । ዓ¢ 亨 সময় নদীর জলে নেমেচি নাইতে–মাধবপুরের পারের ওপরে সেই মেঘনীল দিথলয়ের পটভূমিতে একটা শিমুল গাছ কি সুন্দর দেখাচ্ছে। এই ইছামতী, এই মেঘমালা, এই বর্ষার সবুজ বনভূমি এমনি থাকবে—অথচ আমরা চলে যাবে আমাদের সকল সুখ দুঃখ নিয়ে, আজকের এই মেঘ মেদুর সন্ধ্যার সকল অফুভূতি নিয়ে। ঘাটের ওপর ওই বনলিম লতার কোলের নীচে পুকুর সে ছবিটা ক্রমে বহুদূরের হয়ে পড়চে, এই পল্লীনদীটীর শুমতীরে বঁাশ ও বনসিমলতার ছায়ায় অক্ষয় হয়ে থাকবে সে ছবি, এর আকাশে বাতাসে মিলিয়ে, কিন্তু তাকে চিনে নেবার লোক থাকবে না কেউ, কেউ এমন থাকবে ন যার মনে ও ছবি বেঁচে থাকবে । বারাসাত গেলুম পশুপতি বাবুর কাছে। উনি সকালেই যেতে লিখেছিলেন। কিন্তু শরীরটা একটু খারাপ ছিল। বারাসত নেমে দেখি এ অঞ্চলে খুব বৃষ্টি হয়ে গিয়েচে—অথচ কলকাতায় এক ফোটাও জল নেই। হাসপাতালে গিয়ে দেখি পশুপতি বাবু জেল দেখতে গিয়েচেন। অামি বসে রইলুম, তারপর পশুপতি বাবু এলেন। আমায় পেয়ে খুব খুশি । দু’জনে হাসপাতাল দেখতে গেলুম, গোবরডাঙ্গা থেকে এসেচে একটা জখম রোগী। তার মাথায় দু তিনটা বড় বড় গৰ্ত্ত। তার বড় ভাই নাকি বিষয়ের ভাগ দিতে হবে বলে তার মাথায় ওই রকম মেরেচে। পশুপতি বাবু বল্লেন লোকটা বাঁচবে না । জাতিতে ব্রাহ্মণ, গাঙ্গুলি, গোবরডাঙার কাছে বেড়গুমি গ্রামে বাড়ী। হাসপাতালের কালে, মোটা মত একটা নাস ওকে যত্ন করচে দেখলুম। তারপর জেল দেখতে গেলুম । তখন কয়েদীরা সব খেতে বসেচে। খাবার বন্দোবস্ত দেখে মনে হোল জেলের মধ্যে ওরা বেশ মুখেই থাকে। . দিব্যি সাদা চালের ভাত, তরকারীট রোধেচে তার বেশ সদগন্ধ বেরুচ্ছে, - ডালটাও বেশ ঘন। সপ্তাহে একদিন মাছ, একদিন মাংস দেয় । ওরা নিজেদের বাড়ীতে অমন খাদ্য প্রতিদিন তো দূরের কথা, কালেভদ্রে খেতে পায় কি না সন্দেহ। একজন কয়েদী ভদ্রলোক শ্রেণীর, তাকে বলুম, আপনার কি হয়েছিল, কতদিনের জেল ? বল্লে, চিটিং কেস মশাই। পনেরো মাসের জেল। অার একটা ছোকরীকে বসিরহাট অঞ্চল থেকে ধরে এনেচে । তার বিচার এখনও হয় নি। জিগ্যেস করলুম-কি করেছিলে ?