পাতা:ঋষি রবীন্দ্রনাথ - অমলেন্দু দাশগুপ্ত (১৯৫৪).pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঋষি রবীন্দ্রনাথ
৩৩

(৭)

 ব্রহ্মদর্শনের পর বৈদিক ঋষি ঘোষণা করিয়াছিলেন—

বেদাহমেতং পুরুষং মহান্তং
আদিত্যবর্ণং তমসঃ পরস্তাৎ॥

 —হে বিশ্ববাসী, তোমরা সকলে শোন, তমসার পারে সেই জ্যোতির্ময় মহান পুরুষকে আমি জানিয়াছি॥

 রবীন্দ্রনাথের মুখেও এইরূপে একটি ব্রহ্মঘোষণা উচ্চারিত হইয়াছে এবং তাহাই অতঃপর প্রমাণ হিসাবে বিচারের জন্য গ্রহণ করা যাইতেছে।

 এই উপলব্ধিটির বিশ্লেষণে আমরা দেখিতে পাইব, রবীন্দ্রনাথ স্পষ্টভাবেই জানাইয়াছেন যে, তিনি ব্রহ্মকে দেখিয়াছেন। আর, পূর্বে যে-সাধনার কথা বলা হইয়াছে, তাহারও স্পষ্ট ইঙ্গিত এই উপলব্ধিটির মধ্যেই পাওয়া যাইবে।

 রবীন্দ্রনাথের আধ্যাত্মিক উপলব্ধির যে কয়টি বিবরণ পাওয়া যায়, তন্মধ্যে বর্তমান উপলব্ধিটিই আমাদের আলোচ্য বিষয়ে বা প্রসঙ্গে শ্রেষ্ঠতম প্রমাণ বা সাক্ষ্যরূপে অন্তত আমার নিকট মনে হইয়া থাকে। কাজেই, রবীন্দ্রনাথের এই ব্রহ্মোপলব্ধিটির অপেক্ষাকৃত একটু বিশদ আলোচনা করা যাইতেছে।

 ব্রহ্মদর্শনের পরে রবীন্দ্রনাথের মুখে যে উদাত্ত ঘোষণা উচ্চারিত হইয়াছে, তাহা এই—

ধূলির আসনে বসি ভূমারে দেখেছি ধ্যান চোখে
আলোকের অতীত আলোকে।