ভাদুড়ী, যোগেশচন্দ্র চৌধুরী, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, শ্রীরবি রায় ও জীবন গঙ্গোপাধ্যায় প্রভৃতি আরো অনেককে নিয়ে গড়ে তুললেন একটি নতুন সম্প্রদায় এবং নাটক নির্বাচন করলেন দ্বিজেন্দ্রলালের “সীতা”। প্রথমে নির্মলেন্দু লাহিড়ীও সম্প্রদায়ে ছিলেন, কিন্তু পারিবারিক দুর্ঘটনায় (বোধ করি পিতৃবিয়োগ) শেষ পর্যন্ত অভিনয়ে যোগ দিতে পারেন নি-কেবল একদিন কি দুইদিন শঙ্ককের ভূমিকায় মহলা দিয়ে গিয়েছিলেন।
এবার নাট্যাচার্য ও পরিচালক রূপে শিশিরকুমার অনুষ্ঠানের প্রত্যেকটি বিভাগে তীক্ষ্ম দৃষ্টি রেখে কাজ করবার ক্ষেত্র পেলেন সম্পূর্ণ স্বাধীন ভাবেই। ফলও পাওয়া গেল হাতে হাতেই। অভিনয় ও প্রয়োগনৈপুণ্যে হ'ল এমন উচ্চশ্রেণীর যে, রাত্রির পর রাত্রি ধরে প্রেক্ষাগৃহে আর তিল ধারণের ঠাঁই থাকত না। প্রদর্শনী শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিনয় বন্ধ হয় নি। বেশ বোঝা গেল, সাধারণ রঙ্গালয়ে অল্পদিন অভিনয় করবার পর দীর্ঘকাল চোখের আড়ালে থেকেও শিশিরকুমার জনসাধারণের মনের আড়ালে যান নি। সবাই তাঁকে চায়! তিনি উৎসাহিত হয়ে উঠলেন। স্থির করলেন দ্বিজেন্দ্র-লালের “সীতা” নিয়ে স্বাধীন ভাবেই আবার দেখা দেবেন সাধারণ রঙ্গালয়ে। ভাড়া নেওয়া হ'ল আলফ্রেড থিয়েটার।
দুর্ভাগ্যক্রমে “সীতা”র অভিনয়দ্বত্ব তাঁর হাতছাড়া হয়ে গেল। কিন্তু শিশিরকুমার হতাশ হলেন না। যোগেশচন্দ্র চৌধুরীকে নিয়ে প্রস্তুত করতে লাগলেন রাম-সীতার পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে নতুন একটি পালা। “সীতা”কে সব দিক দিয়ে অভিনব ও নবযুগের উপযোগী ক'রে তোলবার জন্যে শিশিরকুমার প্রস্তুত হতে লাগলেন। সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগল আলফ্রেড থিয়েটারের অভিনয়। সেইটেই হল কুবিখ্যাত মনোমোহন থিয়েটার তথা পুরাতন দলের পতনের প্রধান হেতু।
ব্যাপারটা একটু, খুলেই বলি। আলমগীরের ভূমিকায় শিশিরকুমারের প্রথম আবির্ভাবের সময়েই লোকের চোখ ফোটে সর্ব প্রথমে। প্রাকৃতজন ছাড়া আর সকলেই উপলব্ধি করতে পারে যে, গিরিশোত্তর যুগের অভিনয় এ দেশে আর চলবে না। মনোমোহন ছিল ঐ শ্রেণীর
৮৮