পালোয়ানের হাতের এক রদ্দা খেলে তারা মাটির উপরে আর পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। কিন্তু জ্যাক জনসন একদিন শখ ক’রে গোবরবাবুকে তাঁর ঘাড়ের উপরে রদ্দা মারবার জন্যে আহ্বান করেছিলেন। গোবরবাবু তাঁকে বিশ-পঁচিশবার রদ্দা মারেন সজোরে, কিন্তু জনসন একটুও কাতর না হয়ে হাসিমুখে অটলভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পেরেছিলেন।
তারপর জনসন একটি সংকীর্ণ গণ্ডীর ভিতরে গিয়ে গোবরবাবুকে বলেন, “এইবারে আমাকে ঘুসি মারো দেখি।” কিন্তু এমনি তাঁর ক্ষিপ্রকারিতা ও পাঁয়তারার কায়দা যে, বহু চেষ্টার পরেও গোবরবাবু জনসনের দেহ স্পর্শ করতেও পারেননি।
গোবরবাবুর বৈঠকখানায় আমরা বেশ কিছু কাল সানন্দে কাটিয়ে দিয়েছিলুম। সন্ধ্যার পর প্রায়ই সেখানে আসতেন অদ্বিতীয় সরদবাদক স্বর্গীয় ওস্তাদ করমতুল্লা খাঁ, স্বর্গীয় ওস্তাদ গায়ক জমীরুদ্দিন খাঁ, প্রসিদ্ধ তবলাবাদক স্বর্গীয় দর্শন সিং ও গায়কশ্রেষ্ঠ শ্রীকৃষ্ণচন্দ্র দে প্রভৃতি শিল্পিগণ। গুণীরা বইয়ে দিতেন সুরের সুরধুনী এবং লীলায়িত হয়ে উঠত আমাদের মন তারই ছন্দে ছন্দে। এক-একদিন আমাদের সৌন্দর্যের স্বপ্নভঙ্গ হ’ত প্রায় ভোরের বিহঙ্গকাকলির সঙ্গে সঙ্গে।
তারপর গোবরবাবু আবার দীর্ঘকালের জন্যে দিগ্বিজয়ে বেরিয়ে গেলেন আমেরিকার দিকে।
১১৯