পাতা:এখন যাঁদের দেখছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

চৌদ্দ

ইয়াঙ্কিস্থানে বাঙালী মল্ল

 অনেক সময় কেবল কৌশলেই প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করা যায়। আমি এমন লাঠিয়াল দেখেছি, যার ক্ষুদে একহারা চেহারা একেবারেই নগণ্য। কিন্তু তার সামনে অতিকায়, মহাবলবান ব্যক্তিও লাঠি হাতে ক’রে দাঁড়াতে পারে নি।

 কুস্তিতেও প্রতিপক্ষকে কাবু করবার একটা প্রধান উপায় হচ্ছে, প্যাঁচ। কাল্লু পালোয়ানের কাছে কিক্কর সিং হেরে গিয়েছিলেন, সে কথা আগেই বলেছি। অথচ কেবল শারীরিক শক্তির উপরেই যদি কুস্তির হারজিত নির্ভর করত, তাহ’লে কাল্লুর সাধ্যও ছিল না কিক্করকে হারিয়ে দেবার। কারণ কিক্কর যে কাল্লুর চেয়ে ঢের বেশী জোয়ান ছিলেন এ বিষয়ে আমার একটুও সন্দেহ নেই।

 প্রসঙ্গক্রমে মনে পড়ছে আর একটি কথা। ইতিপূর্বেই গামা বনাম হাসান বক্সের কুস্তির কথা বর্ণনা করেছি। জয়লাভের পর গামা যখন বিজয়গৌরবে উৎফুল্ল হয়ে একটি মস্ত রূপোর গদা কাঁধে ক’রে আখড়ার চারিদিকে পরিক্রমণ করছেন, তখন দর্শকদের আসন থেকে হঠাৎ এক জাপানী ভদ্রলোক উঠে এসে গামাকে প্রতিযোগিতায় আহ্বান করলেন। সবাই তো রীতিমত অবাক, কারণ গামার সঙ্গে জাপানীটির চেহারা দেখাচ্ছিল বালখিল্যের মতই অকিঞ্চিৎকর। কিন্তু জাপানীটি ছিলেন যুযূৎসু যুদ্ধে বিশেষজ্ঞ। বললেন, গামা যদি জামা-কাপড় প’রে আসেন তাহ’লে তিনি তখনি তাঁর সঙ্গে লড়তে প্রস্তুত আছেন। কিন্তু গামা হচ্ছেন কুস্তির খলিফা, যুযূৎসুর প্যাঁচ তাঁর অজানা, কাজেই জাপানীর প্রস্তাবে রাজী হলেন না। অথচ গামা কেবল প্যাঁচের জোরে লড়েন না, তাঁর দেহেও আছে প্রচণ্ড শক্তি। এমন কথাও জানি, গামা তাঁরও চেয়ে আকারে ঢের বড় ও ভারী

১২০