সাত সাগরের পারে বিদেশ-বিভূঁয়ে সিংহের বিবরে গিয়ে তিনি পরাস্ত ক’রে এসেছেন পশুরাজকে। কৃষ্ণাঙ্গ-বিদ্বেষী শ্বেতাঙ্গদের স্বদেশে গিয়ে সেখানকার শ্রেষ্ঠদের বাহুবলে হারিয়ে দিয়ে নিজের শ্রেষ্ঠতা প্রতিপাদন করবেন বাংলার এক ছেলে, এটা ছিল কল্পনাতীত ব্যাপার।
আগেই বলেছি, পাঞ্জাবকেশরী গামা অতুলনীয় ও ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ পালোয়ান হ’লেও, পাশ্চাত্য দেশ তাঁর শক্তি সম্বন্ধে সম্যকরূপে পরিচিত নয়। কারণ তিনি সেখানকার উল্লেখযোগ্য দুইজনের বেশী পালোয়ানের (ডাঃ রোলার ও বিস্কো) সঙ্গে কুস্তি লড়েননি। আর গোবরবাবু পাশ্চাত্য দেশে গিয়ে সেখানকার সর্বশ্রেণীর সর্বশ্রেষ্ঠ পালোয়ানদের সঙ্গে দীর্ঘকাল ধ’রে শক্তিপরীক্ষা করেছেন।
জো স্টেচার হেভি ওয়েটে পৃথিবীজয়ী হয়েছিল দুইবার (১৯১৬ থেকে ১৯১৮ পর্যন্ত; এবং ১৯২০)। বিস্কোও দুইবার ঐ উপাধি লাভ করেছিল। গোবরবাবুর সঙ্গে তাদের লড়াই হয় একাধিকবার। কখনো জিতেছেন গোবরবাবু, কখনো জিতেছে তারা। জিম লণ্ডস্ ও সনেনবার্গও পরে হয়েছিল পৃথিবীজয়ী। প্রথম ব্যক্তি গোবরবাবুর সঙ্গে সমান সমান হয়েছিল এবং শেষোক্ত ব্যক্তি হেরে গিয়েছিল তাঁর কাছে। এ ছাড়া আরো যে কত নামজাদা শ্বেতাঙ্গ পালোয়ান গোবরবাবুর পাল্লায় পড়ে ভূমিচুম্বন করেছিল, এখানে তার ফর্দ দাখিল করবার জায়গা নেই। মোট কথা, এত বেশী শ্বেতাঙ্গ পালোয়ানের গর্ব খর্ব করতে পারেননি আর কোন ভারতীয় মল্ল।
অ্যাড স্যাল্টেলকে হারাবার পর আমেরিকায় স্ট্র্যাঙ্গলার লুইস ছাড়া গোবরবাবুর যোগ্য আর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী রইল না। সুতরাং গোবরবাবু তাকেই যুদ্ধে আহ্বান করলেন। কিন্তু তাঁর সর্বোচ্চ আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়নি; অক্ষমতার জন্যে নয়, বিচারকের সমূহ অবিচারে। কালোর অদ্বিতীয়তা যখনই প্রমাণিত হবার উপক্রম হয়, ধলোরা এমনি সব উপায়েই মান বাঁচাবার চেষ্টা করে।
তার আর একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে, জ্যাক জনসন বনাম জেস উইলার্ডের মুষ্টিযুদ্ধে। কালা আদমী পৃথিবীজেতার আসনে
১২৮