কারুকে পাওয়া যাবে না, নয়তো পাওয়া যাবে সাংঘাতিকভাবে আহত অবস্থায়।
হঠাৎ দেখা গেল, অভিনেত্রীটি চোরা দ্বার দিয়ে মঞ্চের উপরে উঠে এল—তার চোখে-মুখে দারুণ আতঙ্ক। তারপর মঞ্চের উপর থেকে সবেগে দৌড় মেরে সে অদৃশ্য হয়ে গেল। শুনেছি সেই বিষম দৌড় শেষ হয়েছিল একেবারে তার বাসায় গিয়ে।
নরেশচন্দ্রও আবিষ্কৃত হলেন জীবন্ত—কিন্তু আহত অবস্থায়। চোরা দ্বার দিয়ে রথ যখন পাতালে নামে তখন রঙ্গমঞ্চের প্রান্তের সঙ্গে হয় তাঁর হাতের কনুইয়ের সঙ্ঘর্ষ। কনুইয়ের হাড় একেবারে চুরমার হয়ে যায় নি বটে, কিন্তু সেই কনুই নিয়ে তাঁকে ভুগতে হয়েছিল বেশ কিছুকাল।
শুনলুম, রথ যখন নেমে এসেছিল মাটি থেকে ইঞ্চি কয়েক উপরে, তখন রথারোহীদের সৌভাগ্যক্রমে বিগড়ে যাওয়া কল নাকি আবার আপনা-আপনিই ঠিক হয়ে যায়। তা নইলে নরেশচন্দ্র সূক্ষ্ম দেহ নিয়ে গোলকধামে যেতেন কিনা জানি না, তবে সশরীরে আজ যে ধরাধামে বিদ্যমান থাকতেন না, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। তাঁকে রক্ষা করেছেন ভগবান।
যতদূর মনে পড়ে, এই দুর্ঘটনার পর “নসীরামের” অভিনয় বন্ধ হয়ে যায়। এবং নরেশচন্দ্রও ব্যক্তিগত কারণে মিনার্ভা থিয়েটারের সঙ্গে সম্পর্ক তুলে দিয়ে তাজমহল ফিল্ম কোম্পানীতে যোগদান করেন। তারপর চিত্রজগতে হয় তাঁর প্রথম আত্মপ্রকাশ। ছবি তখনও কথা কইতে শেখেনি।
তারপর জনসাধারণের সঙ্গে নরেশচন্দ্রের আবার দেখা হয় ১৯২৩ খৃষ্টাব্দে। ষ্টার রঙ্গমঞ্চে আর্ট থিয়েটার লিমিটেড খোলেন “কর্ণার্জুন” এবং নরেশচন্দ্র গ্রহণ করেন শকুনির ভূমিকা। এই পালাটি কেবল লোকপ্রিয়তার জন্যে নয়, অন্য এক কারণে স্মরণীয় হয়ে আছে। “কর্ণার্জুন” নাট্যাভিনয়েই সাধারণ বাংলা রঙ্গালয়ে সর্বপ্রথমে দেখা দেন তিনকড়ি চক্রবর্তী, অহীন্দ্র চৌধুরী, দুর্গা দাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও ইন্দুভূষণ মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি অভিনেতৃগণ। “শকুনি” হচ্ছে নরেশচন্দ্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভূমিকা এবং আমার মতে
১৪৫