রূপে নাম কেনেন) এবং শ্রীপ্রেমাঙ্কুর আতর্থী (পরে ঔপন্যাসিক ও চিত্র-পরিচালক)। এই দলে আর একজনও ছিলেন, পরে ভেস্তে গিয়েছেন কেবল তিনিই। তাঁর নাম শ্রীনরেশচন্দ্র দত্ত। কার্যক্ষেত্রে আরম্ভ করেছিলেন তিনি আশাপ্রদ জীবন। কাজ করতেন সুরেন্দ্রনাথের বিখ্যাত দৈনিক “বেঙ্গলী”র সম্পাদকীয় বিভাগে। তারপর প্রথম মহাযুদ্ধের সময়ে “বেঙ্গলী”কে ছেড়ে অবলম্বন করলেন মসীর বদলে অসি—অর্থাৎ সৈনিকদুষ্পাঠ্য। দেশে ফিরে হলেন সাবডেপুটি। ঐ পর্যন্ত।
প্রসঙ্গক্রমে আর একটা কথা মনে হচ্ছে। প্রেমাঙ্কুর আর আমারও জীবন হয়তো বদলে যেত। প্রথম মহাযুদ্ধের সময়ে ইংরেজ গভর্ণমেণ্ট সেনাদলে ভর্তি হবার জন্যে বাঙালী যুবকদের আহ্বান করেন। প্রেমাঙ্কুর ও আমি পরামর্শের পর স্থির করলুম, আমরাও ধারণ করব মসীর বদলে অসি। বিপুল উৎসাহে আমি একদিন যথাস্থানে গিয়ে সেনাদলে নাম লিখিয়ে এলুম। প্রেমাঙ্কুর তো তখন থেকেই সেকালকার গোরা সৈনিকদের মত খাটো ক’রে চুল ছাঁটতে শুরু ক’রে দিলেন। দুজনে মিলে দেখতে লাগলুম যুদ্ধক্ষেত্রের রক্তাক্ত স্বপ্ন। সে যাত্রা সৈনিক হবে ব’লে নাম লিখিয়েছিল প্রায় ছয় শত জন বাঙালী যুবক। কিন্তু হঠাৎ গভর্ণমেণ্টের মত গেল বদলে। বললেন, না, আপাততঃ আর বাঙালী ফৌজের দরকার নেই। প্রথম ছয় শত জনের নাম খারিজ ক’রে দেওয়া হ’ল। কিছুদিন পরে আবার এল সরকারি আহ্বান—বাঙালী ফৌজ চাই। নতুন ক’রে সবাই নাম লেখাও। আমাদের ভিতর থেকে সে আহ্বানে সাড়া দিলেন কেবল নরেশচন্দ্র। প্রেমাঙ্কুরের ও আমার সে প্রবৃত্তি আর হ’ল না। প্রথম বারেই প্রত্যাখ্যাত হয়ে জুড়িয়ে গিয়েছিল আমাদের প্রতপ্ত উৎসাহ। ভুল করেছি ব’লে মনে হচ্ছে না। কারণ আজ জেনেছি অসির চেয়ে মসীর শক্তিই বেশী। সারা পৃথিবীতে এখন এই যে “কোল্ড ওয়ার” বা “ঠাণ্ডা যুদ্ধ” চলছে, তার প্রধান অস্ত্রই তো হচ্ছে কালি ও কলম।
যাক্। “জাহ্নবী” কার্যালয়ের কথা হচ্ছিল। ওখানে আমিও
১৫৫