পাতা:এখন যাঁদের দেখছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দিলীপকুমার রায়

বাংলা দেশের ও বিলাতের অভিনয়কলা নিয়ে কিছু, কিছু, আলোচনা এবং স্যর হেনরি আর্ভিংয়ের সঙ্গে গিরিশচন্দ্রের তুলনাও করলেন। স্পষ্ট বললেন, আর্ভিংয়ের চেয়ে গিরিশচন্দ্র নিরেস অভিনয় করেন না।

 পিতা যখন অভিনেতা হিসাবে গিরিশচন্দ্রের সঙ্গে আর্ভিংয়ের তুলনায় নিযুক্ত, বালক দিলীপকুমারও তখন যে নাট্যকার হিসাবে গিরিশচন্দ্রের সঙ্গে নিজের পিতাকে তুলনা করতে ব্যস্ত হয়ে আছেন, সেটা টের পাওয়া গেল অবিলম্বেই।

 হঠাৎ “অর্চনা” থেকে চোখ তুলে তিনি ব’লে উঠলেন, “বাবা, বাবা, গিরিশবাবর প্রতাপসিংহের চেয়ে তোমার ‘রাণা প্রতাপ' আরো ভালো বই হয়েছে!”

 পুত্রের কাছ থেকে এই অযাচিত ও অলিখিত “সার্টিফিকেট” লাভ ক’রে দ্বিজেন্দ্রলাল সহাস্যে মুখ ফিরিয়ে করলেন দিলীপকুমারের দিকে সম্মেহ দৃষ্টিপাত। আমাদের সকলেরই মুখে ফুটল কৌতুকহাসি।

 দ্বিজেন্দ্রলালের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি কয়েকবার, কিন্তু আর কোনদিন পিতা ও পুত্রকে একসঙ্গে দেখিনি। দ্বিজেন্দ্রলালের পরলোকগমনের পরেও বহুকাল পর্যন্ত দিলীপকুমারের সঙ্গে আমার চোখোচোখি হয়নি। আবার যখন দেখা হ’ল, আমি তখন প্রৌঢ় ও দিলীপকুমার এসে দাঁড়িয়েছেন যৌবনের প্রান্তভাগে।

 ইতিমধ্যে তাঁর খবর পেয়েছি মাঝে মাঝে। মন দিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা করছেন। এঁর-ওঁর-তাঁর কাছে গান শিখছেন। গোড়ার দিকে তাঁর একজন সঙ্গীতশিক্ষক ছিলেন বকুবাবু, (তাঁর ভালো নামটি ঠিক মনে পড়ছে না, তিনি ছিলেন সুগায়ক এবং সাধারণ রঙ্গালয়ে অভিনেতারূপেও অল্পবিস্তর নাম কিনেছিলেন)। তারপর শুনলুম, দিলীপকুমার য়ুরোপে যাত্রা করেছেন।

 য়ুরোপ প্রত্যাগত দিলীপকুমারকে অভিনন্দন দেবার জন্যে রামমোহন লাইব্রেরীতে এক সভার আয়োজন করা হয়। সেইখানে আবার তাঁর দেখা পাই এবং প্রথম তাঁর গান শুনি। এবং সঙ্গে

১৮১