তার মধ্যে আছে রবীন্দ্রনাথের দ্বারা চিত্রিত একটি বিখ্যাত চরিত্রের স্পষ্ট অনুকরণ। শরৎচন্দ্র একখানি পত্রে নিজেই সেই অনুকরণকে চুরির নামান্তর ব’লে স্বীকার করেছেন!
আমি বরাবরই লক্ষ্য ক’রে এসেছি, উচ্চশ্রেণীর সাংবাদিক ও সম্পাদকের যে সব গুণ থাকা উচিত, প্রভাতচন্দ্রের মধ্যে ছিল তা পূর্ণমাত্রায় বিদ্যমান। কিন্তু বহুকাল পর্যন্ত তিনি নিজের উপযোগী ক্ষেত্রে আত্মপ্রকাশ করবার সুযোগ পাননি, নানা বৈঠকে লক্ষ্যহীনের মত বিবিধ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা ও তর্কাতর্কি ক’রে এবং কাঁড়ি কাঁড়ি বই পড়ে জীবনের দীর্ঘকাল কাটিয়ে দিয়েছেন। তারপর পরিণত বয়সে “আনন্দবাজার পত্রিকা”র সম্পাদকমণ্ডলীর অন্যতম হয়ে সাংবাদিকের কাজ সুরু করেন এবং তারপর দৈনিক “ভারতে”র সম্পাদকের পদে নির্বাচিত হন। তিনি বিশেষ যোগ্যতার সঙ্গেই নিজের কর্তব্যপালন করেছিলেন। কিন্তু পরে “ভারত' নিষিদ্ধ পত্রিকায় পরিণত ও তার অস্তিত্ব বিলপ্ত হয়। বোধ করি পত্রিকা সম্পর্কীয় কোন কারণের জন্যেই কিছুকাল তাঁকে কারাবরণ ও করতে হয়।
রাজনীতি নিয়ে তিনি কিশোর বয়স থেকেই মাথা ঘামিয়ে এসেছেন এবং প্রাচীন বয়সে বিধান সভার সভ্যপদপ্রার্থী হয়ে নির্বাচন-দ্বন্দ্বেও যোগদান করেছেন।
আজও প্রভাতচন্দ্রের প্রকৃতি, কথাবার্তা ও ভাবভঙ্গি একটুও পরিবর্তিত হয়নি। মাঝে মাঝে তাঁর সঙ্গে যখন দেখা হয়, তাঁর দুর্দান্ত আকার, এলোমেলো পাকা চুল ও ঘন দাড়িগোঁফের মধ্যে ফিরিয়ে পাই সেই নবীন ও পরাতন প্রভাতচন্দ্রকেই।
২১৪