করেছেন ব’লে মনে পড়ছে না, এখন এই পথে দেখি একাধিক ব্যক্তিকে। অনেকেরই মতে লেখকদের সঙ্গে প্রকাশকদের হচ্ছে খাদ্য ও খাদকের সম্পর্ক। সুধীরের বেলায় ও-কথা খাটে না।
“জাহ্নবী”র ছোট আসরেই সুধীরের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয়, বোধ করি তিনি তখন সবে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সেই পঠন্দশাতেই সাহিতিক হবার উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে তিনি করেছিলেন লেখনীধারণ। একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত হ’তে থাকে তাঁর রচনা।
তারপর “জাহ্নবী”, “যমুনা”, “সঙ্কল্প” ও “মর্মবাণী” পত্রিকা পরে পরে উঠে গেল। এ সব কাগজের সঙ্গেই সধীরের ও আমার সম্পর্ক ছিল। একদিন আমরা দু’জনে সুকিয়া (এখন কৈলাস বসু) ষ্ট্রীট দিয়ে যাচ্ছি। এমন সময়ে কান্তিক প্রেস থেকে স্বর্গীয় মণিলাল গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের আহবান করলেন।
মণিলাল বললেন, “স্বর্ণকুমারী দেবী আমার উপরে “ভারতী”র ভার অর্পণ করতে চান। আপনারা দু’জনে যদি আমাকে সাহায্য করবার প্রতিশ্রুতি দেন, তাহ’লে সে ভার আমি গ্রহণ করতে পারি।”
তাঁর প্রস্তাবে আমরা রাজি হলুম। তারপর নতুন ক’রে আবার “ভারতী” প্রকাশিত হ’তে লাগল এবং আমাদের দল রূপান্তরিত হ’ল “ভারতী”র দলে।
সুধীরের পিতৃদেব স্বর্গীয় এম সি সরকার রায় বাহাদুরের একখানি আইন সংক্রান্ত পুস্তকের দোকান ছিল। সুধীরও তখন বি-এ পাস ক’রে আইন পড়ছিলেন। তারপর হঠাৎ আইনের পড়া ছেড়ে দিয়ে বইয়ের দোকানে গিয়ে বসতে সুরু করলেন। তিনি হচ্ছেন সাহিতিক, শুকেনো আইনের কেতাব নিয়ে নিযুক্ত থাকতে চাইলেন না। প্রকাশ করতে লাগলেন বাংলা কথাসাহিত্যের পুস্তক। এ বিভাগে তাঁদের দ্বারা প্রকাশিত প্রথম দু’খানি বই যথাক্রমে চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও আমার দ্বারা রচিত। আজ তিনি ফলাও ক’রে ব্যবসা ফেঁদেছেন, “এম সি সরকার এণ্ড সন্স” হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান প্রকাশক। কিন্তু এই বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের মূলে আছে একমাত্র সুধীরেরই মনীষা, সততা ও অমায়িকতা। আজ পর্যন্ত
২১৯