যায়। কিন্তু ভাস্কর্যকলা নিয়ে অভহিতভাবে সাধনায় নিযুক্ত হয়ে আছেন, এমন কোন উচ্চশ্রেণীর বাঙালী শিল্পীর নাম সেদিন পর্যন্ত আমরা জানতুম না, যদিও সখের খাতিরে এ বিভাগে মাঝে মাঝে হস্তক্ষেপ করেছেন, কোন কোন চিত্রশিল্পী। যেমন শিল্পাচার্য অবনীন্দ্রনাথ। কিন্তু সে হচ্ছে খেলাচ্ছলে কোন–কিছু গ’ড়ে তোলা এবং তাও টুকিটাকি ভাস্কর্যের কাজ।
অনেক কাল আগে তাই প্রথম যেদিন শুনলুম, দেবীপ্রসাদ ভাস্কর্যকলাকেও বিশেষভাবে অবলম্বন করেছেন, তখন মনে জেগেছিল আনন্দের সাড়া। দেবীপ্রসাদের আমন্ত্রণে একদিন সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর বাড়ীতে গিয়ে হাজির হলুম। তাঁর হাতের কি কি কাজ দেখেছিলাম তা আর মনে নেই, তবে প্রমাণ নরদেহের চেয়ে ঢের বেশী উঁচু একটি মূর্তির কথা স্মরণ হচ্ছে। সেটি তাজহাটের রাজার-অর্থাৎ দেবীপ্রসাদের মাতুলের প্রতিমূর্তি।
তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ছবি আঁকার সঙ্গে সঙ্গে তিনি গড়েছেন মূর্তির পর মূর্তি। একটু আগেই তাঁকে বলেছি সব্যসাচী। সত্যই তাই। তিনি সব্যসাচীর মতই দই দক্ষ হাতে কাজ করতে পারেন। ডান হাতে ধরেন তুলি এবং বাম হাতে ধরেন বাটালি। আজ তাঁর ভারত-জোড়া নাম। তিনিই হচ্ছেন সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী ভাস্কর। তাঁর কৃতিত্বের জন্যে আমরা অনায়াসেই গর্ব অনুভব করতে পারি।
কলকাতায় বার্ষিক শিল্পপ্রদর্শনী হয়। সেখানে গেলে বোঝা যায়, ভাস্কর্যকলার দিকে আজকাল তরুণ বাঙালী শিল্পীদের দৃষ্টি হয়েছে অধিকতর আকৃষ্ট। ভাস্করদের সংখ্যা অবশ্য বেশী নয়, দুই-চারিজনের দুই চারিটি হাতের কাজের নমুনা থাকে মাত্র। তবু এটা আশাপ্রদ লক্ষণ ব’লে ধ’রে নিতে পারি।
কিন্তু মনে হয় আমাদের তরুণ ভাস্কররা গোড়াতেই গলদ ক’রে বসতে চান। কারণ অন্তর্মুখী নয় তাঁদের দৃষ্টি, তা হচ্ছে বহির্মুখী। পরিকল্পনার বিষয়বস্তু সংগ্রহ করেন না তাঁরা আপন আপন মনের ভিতর থেকে স্বাধীনভাবে। তাঁরা করতে চান অনুকরণ। তাঁদের চোখের সামনে সর্বদাই বিরাজ করে এপ্স্টিন,
২২৫