পাতা:এখন যাঁদের দেখছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শ্রীশৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়

সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই সর্বপ্রথমে যোগ দেন চলচ্চিত্রশালায়। তারপর একে একে অনেক লেখকই ঐদিকে ছুটেছেন মধুলুব্ধ মধুকরের মত। শ্রীপ্রেমাঙ্কুর আতর্থী, দীনেশরঞ্জন দাস, “প্রবাসী” ও “মডার্ন রিভিউ”য়ের বর্তমান সম্পাদক শ্রীকেদারনাথ চট্টোপাধ্যায়, শ্রীপ্রেমেন্দ্র মিত্র, শ্রীশৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়, “নাচঘরে”র সহকারী সম্পাদক শ্রীপশুপতি চট্টোপাধ্যায়, শ্রীবিধায়ক ভট্টাচার্য ও শ্রীপ্রণব রায় প্রভৃতি। শ্রীদেবকী বসু ও প্রথম জীবনে ছিলেন মফস্বলের এক পত্রিকার সহকারী সম্পাদক। আমিও একসময়ে আকৃষ্ট হয়েছিলুম সিনেমার দিকে। বৎসর দুই হাতেনাতে কাজও করেছি নানা বিভাগে। পরিচালকরূপে পত্রিকায় একবার আমার নামও বিজ্ঞাপিত হয়েছিল। কিন্তু সিনেমা আমাকে পুরোপরি আবিষ্ট করতে পারেনি কোনদিনই। যথাসময়েই বুঝে নিয়েছিলুম একসঙ্গে সিনেমা ও সাহিত্যের জোড়া ঘোড়া চালাবার সাধ্য আমার হবে না। তাই পালিয়ে এসেছি আবার সাহিত্যজগতে। প্রেমাঙ্কুর, শৈলজানন্দ ও প্রেমেন্দ্র প্রভৃতি তা পারেননি, তাই সাহিত্যসভা থেকে তাঁদের বিদায় গ্রহণ করতে হয়েছে। অবশ্য প্রেমাঙ্কুর আবার নতুন ক’রে কলম ধরেছেন বটে। কিন্তু সিনেমার সঙ্গে এখন আর তাঁর কোন সম্পর্কও নেই।

 কেবল সাহিত্যিক নন, অভিনেতা ছাড়া অন্যান্য শ্রেণীর অধিকাংশ শিল্পীও সিনেমা নিয়ে মাতলে নিজের ধর্মরক্ষা করতে পারে না। চিত্রশিল্পিরূপে শ্রীচারুচন্দ্র রায়ের তারকা হচ্ছিল ক্রমেই ঊর্ধ্বগামী। সিনেমা জগতে গিয়েও তিনি শিল্পকর্ম ছাড়েননি বটে, কিন্তু একক শিল্পিরূপে তিনি করতেন যে সব রূপসৃষ্টি, প্রকাশ করতেন নিজের যে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, রপরসিকদের কি তা থেকে বঞ্চিত হ’তে হয়নি? সিনেমায় এখন তিনি কি করছেন না-করছেন বাইরে তার খবর আসে না। এবং তাঁর নিজের হাতে আঁকা কোন ছবিও আর কারুর চোখে পড়ে না। লোকে তাঁকে এর মধ্যেই ভুলে যেতে বসেছে। আর তাঁর চেয়ে বয়োকনিষ্ঠ শিল্পী দেবীপ্রসাদ নিজের সাধনায় অবহিত থেকে তাঁকে ছাড়িয়ে কত দূরে এগিয়ে যেতে পেরেছেন?

 অনন্যসাধারণ গায়ক কৃষ্ণচন্দ্র এবং তাঁর এককালীন শিষ্য শ্রীশচীন্দ্র দেববর্মণকে দেখুন। বৈঠকী গানের আসরে কৃষ্ণচন্দ্রের

২৩১