ত্রিশ
সজনীকান্ত দাস
লিখতে লিখতে একটা কথা মনে হচ্ছে, তাও এখানে লিখে রাখিনা কেন?
অর্ধশতাব্দী আগে যখন আমার সাহিত্য-জীবনের সূত্রপাত হয়, সাহিত্যগুরু বঙ্কিমচন্দ্রের পরলোকগমনের পর তখনও এক যুগ অতীত হয়নি। বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব উত্তরোত্তর বেড়ে উঠছিল বটে, কিন্তু তখনও এখানে সাহিত্যাচার্য এবং সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যশিল্পী রূপে অভিনন্দিত হতেন বঙ্কিমচন্দ্রই। তাঁর সহকর্মী বা সমসাময়িকদের অধিকাংশই তখনও সশরীরে বর্তমান। সেই সময় থেকে আজ পর্যন্ত সাহিত্যে ও শিল্পে স্বনামধন্য অধিকাংশ ব্যক্তির সঙ্গেই সংযোগস্থাপনের দুর্লভ সুযোগ আমি লাভ করেছি এবং এই সৌভাগ্যের জন্যে আত্মপ্রসাদও অনুভব করি মনে মনে। গত অর্ধশতাব্দী ধ’রে অতীতের ও বর্তমানের নানাশ্রেণীর ধুরন্ধরদের আমি নিজে যেমন ভাবে দেখেছি, ঠিক সেই ভাবে দেখাবার জন্যেই গ্রন্থে প্রকাশিত এই প্রবন্ধগুলি লিখিত হয়েছে। “যাঁদের দেখেছি” এবং “এখন যাঁদের দেখছি” এই দুইখানি পুস্তকের মধ্যে আমি সাজিয়ে রাখলুম অর্ধশতাব্দীর সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ছবির মালা। জীবনের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছি, পাছে আমার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই এই সব ব্যক্তিগত ছবি লুপ্ত হয়ে যায়, তাই সময় থাকতে থাকতেই কাগজ-কলম দিয়ে এগুলিকে এঁকে রাখবার চেষ্টা করছি।
সাহিত্যক্ষেত্রে এবং ব্যক্তিগত কার্যক্ষেত্রকে অনেকে পৃথক ক’রে দেখতে অভ্যস্ত নন। তাই সময়ে সময়ে জীবনের শান্তিভঙ্গ হয়। একাধিক পত্রিকায় সমালোচকের কর্তব্য পালন করতে গিয়ে হারিয়েছি আমি একাধিক বন্ধুকে। আমি তাঁদের এখনো বন্ধু ব’লেই মনে
২৩৪