পাতা:এখন যাঁদের দেখছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কল্লোল-গোষ্ঠীর ত্রয়ী

 কল্লোল-গোষ্ঠীর ত্রয়ী বলতে বোঝায় এই তিনজনের নাম— শ্রীঅচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত, শ্রীবুদ্ধদেব বসু, ও শ্রীপ্রেমেন্দ্র মিত্র। এঁরা তিনজনেই কবি, ঔপন্যাসিক ও গল্প-লেখক। তিনজনেই কিছু কিছু, অন্যান্য শ্রেণীর রচনাতেও হাত দিয়েছেন।

  এঁরা তিনজন এবং কল্লোল-গোষ্ঠীভুক্ত আরো কয়েকজন শক্তিশালী লেখক আত্মপ্রকাশ করার সঙ্গে সঙ্গেই তথাকথিত অশ্লীলতার অপরাধে নিষ্ঠুরভাবে আক্রান্ত ও ধিক্কৃত হন। সেই সময়ে—অর্থাৎ প্রায় দুই যুগ আগে—আমি এঁদের পক্ষসমর্থন ক’রে লিখেছিলুমঃ “তবে কি এই অশ্লীলতাই স্বাভাবিক? আমাদের তো বিশ্বাস তাই। এ বিশ্বাস ভুল হ’তেও পারে। এবং অশ্লীলতার যে একটা সীমারেখা আছে, তাও আমরা না মেনে পারব না। কিন্তু একেবারে একেলে সাহিত্য সেই সীমারেখাকে অতিক্রম করেছে কি না, এখন সেইটেই হচ্ছে বিবেচ্য। * * * “What is Art” লেখবার পরেও টলস্টয়ের মতন লোক যে-দুর্বলতা পরিহার করতে পারেন নি, তার কবল থেকে আত্মরক্ষা করা যে সহজ নয়, সে কথা বলা বাহুল্য। এ দুর্বলতা আছে এবং থাকবেও। স্বাভাবিকতার উচ্ছেদ অসম্ভব। কেবল এই চেষ্টাই করা ভালো, যেন সে কুৎসতি না হয়, যেন সে শিষ্টতার সীমানা না ছাড়ায়, যেন সে রূপের সেবা না ভুলে যায়। রূপকে আমরা ব্যাপক অর্থে ধরছি। * * * আমরা অস্কার ওয়াইল্ডের এই বিখ্যাত উক্তি উড়িয়ে দিতে পারি না— লেখার দোষে শ্লীলও অশ্লীল হয়ে দাঁড়ায় এবং লেখার গুণ তার উল্টোটাকেই প্রকাশ করে। যে কোন কুৎসিত বিষয় সুন্দর রূচিকর ক’রে দেখানো যেতে পারে” প্রভৃতি।

 একটা বড় মজার ব্যাপার এই যে, যুগে যুগে অধিকাংশ শ্রেষ্ঠ লেখকেরই বিরুদ্ধে আনা হয়েছে অশ্লীলতার অপরাধ। অনেক সময়ে আবার দেখা গিয়েছে, অভিযোক্তাকেই হ’তে হয়েছে একই

২৫৪