পাতা:এখন যাঁদের দেখছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কল্লোল–গোষ্ঠীর ত্রয়ী

 "শনিবারের চিঠি”র সম্পাদক “কল্লোল” গোষ্ঠীভুক্ত লেখকদের পক্ষে পরমবন্ধুর কাজ করেছেন। “কল্লোলে”র মত ছোট ছোট আরো অনেক পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করেছে বাংলা দেশে। তবে জনসাধারণের দৃষ্টি তাদের দিকে ভালো ক’রে আকৃষ্ট হবার আগেই ফুরিয়ে গিয়েছে তাদের পরমায়ু। কিন্তু “শনিবারের চিঠি” হয়েছিল “কল্লোলের” লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মত। “চিঠি”র সম্পাদকই হয়েছিলেন “কল্লোলের” প্রচারকর্তা। তার অশ্লীলতার অভিযোগ শুনে অনেকেই কৌতূহলী হয়ে “কল্লোলে”র সঙ্গে পরিচিত হন। তারপর তথাকথিত অশ্লীলতার জন্যে কারুর মন অশুচি হয়েছিল কি না সে কথা আমি বলতে পারব না, তবে এটকু অনায়াসেই অনুমান করা যায় যে, একদল অজানিত ও শক্তিধর লেখকের অভাবিত আবির্ভাব দেখে সকলেই বিস্মিত না হয়ে পারেননি। কারুর কারুর কাছে তাঁদের রচনার স্থলবিশেষ হয়তো স্বাস্থ্যকর ব’লে মনে হয়নি, কিন্তু সমগ্রভাবে তাঁদের রচনা যে বলিষ্ঠ, গরিষ্ঠ ও বিশিষ্ট, এ সম্বন্ধে মতদ্বৈধ ছিল না নিশ্চয়ই; তাঁরা কাঁচা হাতে বেলেখেলা খেললে অশ্লীলতার খোরাক জুগিয়েও কিছুতেই টেকসই হ’তে পারতেন না। কিন্তু তাঁরা কচি হাতেও খেলতে পেরেছিলেন পাকা খেলা। লোকে তাই তাঁদের ভুললে না, চিনে রাখলে।

 এই দলেরই অন্যতম উজ্জল নক্ষত্র হচ্ছেন বুদ্ধদেব। কাঁচা বয়সে হয়তো তিনি বয়সোচিত দুর্বলতা প্রকাশ করেছিলেন অল্প-বিস্তর। কারণ “কল্লোলে” প্রকাশিত তাঁর প্রথম গল্প “রজনী হ’ল উতলা” (নামটি খাসা) সম্বন্ধে নিজেই তিনি মত প্রকাশ করেছেন—গল্পটি কিন্তু স্বাস্থ্যকর নয়। ঐটিই তাঁর রচিত প্রথম গল্প কি না, সে খবর আমি রাখি না। তবে প্রথম গল্প না হ’লেও ওটি তাঁর প্রথম বয়সেরই রচনা। সে হিসাবে গল্পটির রচনানৈপণ্য বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।

 বুদ্ধদেবের নিজের মুখে থেকেই জানতে পারি, এগারো বৎসর বয়সেই তিনি তিনচারখানা খাতা কবিতায় কবিতায় ভরিয়ে ফেলেছেন এবং তখন তাঁকে আকৃষ্ট করত আমারই কোন কোন কবিতা। সে আজ

২৬৫