অনুবাদের দিকেই ঝোঁক বেশী। তিনি অনেকগুলি বিদেশী বই তর্জমা করেছেন।
কবি জসীমউদ্দীনের চেহারাখানিও মেঠো এবং সাধারণতঃ রচনাও করেন মেঠো কবিতা। তাঁর এক একটি কবিতা নগরের ইষ্টককোটরে বহন ক’রে আনে গ্রাম্য মাটির সোঁদা গন্ধ। নিজের জন্যে তিনি বেছে নিয়েছেন বিশিষ্ট একটি পথ—তার উপরে আছে মুক্ত নীলিমার আশীর্বাদ এবং ছায়াতরুর স্নিগ্ধ প্রসাদ; তার দুই পাশে আছে দিগন্তে বিলীন তেপান্তর ধানের ক্ষেতের হরিৎ ফসল, আকাশ-নীল সরোবর। সহর পালানো মন পায় ছুটির আমোদ।
“কল্লোলে”র অধিকাংশ লেখক উপন্যাস, গল্প ও কবিতা রচনার দিকে যতটা দৃষ্টি দিয়েছেন, প্রবন্ধ রচনা ও সমালোচনার দিকে ততটা দেন নি। কেবল গল্প ও পদ্য নিয়ে কোন সাহিত্যই পরিপূর্ণতার দাবি করতে পারে না। বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্র শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধকাররূপেও প্রচুর খ্যাতিলাভ করেছেন।
“কল্লোল” গোষ্ঠীর ভিতরে নৃপেন্দ্রকৃষ্ণের বেলায় এর ব্যতিক্রম দেখি। প্রবন্ধের সঙ্গেই তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ এবং তাঁর অনেক প্রবন্ধই গল্পের মত চিত্তহারী ও কবিতার মত উপভোগ্য। ঐ দলের আর একজন লেখক হচ্ছেন শ্রীঅজিত দত্ত। অদ্যাবধি তাঁর সাহিত্যসেবা অব্যাহত আছে। কিছু লাজুক, শান্তশিষ্ট, সুদর্শন চেহারা। বুদ্ধদেবের বাল্যবন্ধু, অল্পবয়স থেকে একসঙ্গে সাহিত্যচর্চা সুরু করেন তাঁরা দুজনেই। অজিত একাধারে কবি ও প্রবন্ধকার। কিছুদিন আগে “রৈবত” ছদ্মনামে তাঁর রচিত একখানি বই পড়েছি, তার নাম “মনপবনের নাও”। প্রধানতঃ সাহিত্য ও চারুকলা নিয়ে সাতাশটি নিবন্ধের সমষ্টি। দৃষ্টি তাঁর রসিক সমালোচকের। তাঁর সব মতই যে সকলের মনের মতন হবে, এমন আশা কেউ করে না। কিন্তু তিনি যা কিছু দেখেছেন, যা কিছু, বলেছেন, মুক্ত দৃষ্টি আর মুক্ত মন নিয়েই দেখেছেন এবং বলেছেন। তাঁর ভাষার ও বক্তব্যের দুই টুকরো নমুনা দিঃ
(১) “তথাকথিত মাইনের লেখকেরা প্রত্যেক দেশের কাব্যসাহিত্যের একটা বিশিষ্ট অংশের রচয়িতা। অন্যান্য সাহিত্যের মত বাঙলা
২৭৩