বসু আমাকে ছবিখানার জন্যে একটা ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন, কিন্তু কোন ব্যবস্থাই হয় নি। তাকে আজ আর কেউ কাজে লাগাতেও পারবেন না। কারণ নায়িকার ভূমিকায় চন্দ্রাবতীকে আর নামানো চলবে না, আজকের চন্দ্রাবতীর সঙ্গে আগেকার চন্দ্রাবতীর দৈহিক পার্থক্য আছে যথেষ্ট। অন্যান্য নট-নটীদের সম্বন্ধেও ঐ কথা। কেউ কেউ গিয়েছেন পরলোকে। ছবি শেষ করতে হ’লে প্রেততত্ত্ববিদদের সাহায্যে তাঁদের পরলোক থেকে টেনে আনতে হয়।
প্রসঙ্গক্রমে ব’লে রাখি, “ঝড়ের যাত্রী”র দুর্ভাগ্য ঐখানেই ফুরিয়ে যায় নি। আর একজন প্রয়োজক নূতন নূতন নট-নটীর সাহায্যে আবার ঐ উপন্যাসখানির চিত্ররূপ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু যাঁর অর্থানুকূল্যে ছবি তোলবার কথা, কয়েক হাজার টাকা উড়ে যাবার পর তাঁরও মন থেকে ছবি তৈরি করবার উৎসাহ উপে যায় কর্পূরের মত।
তারপর চন্দ্রাবতী দেখা দিয়েছেন ছবির পর ছবিতে, সেগুলির সংখ্যার হিসাব রাখি নি। কখনো নবীনা এবং কখনো প্রবীণার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তাঁর প্রত্যেক ভূমিকা দেখবার অবসর আমার হয়নি বটে, কিন্তু যতগুলি দেখেছি তার উপরে নির্ভর ক’রেই চন্দ্রাবতীর কলানৈপুণ্য সম্বন্ধে একটা সুস্পষ্ট ধারণা করতে পেরেছি। তিনি সুন্দরী। কিন্তু কি সাধারণ রঙ্গালয়ে আর কি চিত্রজগতে কেবল দৈহিক সৌন্দর্যকে কোন দিনই অভিনয়ের মানদণ্ডরূপে গ্রহণ করা হয় নি। সুগঠিত তনু, সুশ্রী চেহারা ও মিষ্ট মুখ নিয়ে বহু তরুণীই পাদপ্রদীপের আলোকে বা ছবির পর্দায় দেখা দিয়েছেন, কিন্তু দর্শকদের চোখ ভুলিয়েও তাঁরা তাদের মনের উপর কিছুমাত্র রেখাপাত করতে পারেন নি। বিশ্ববিখ্যাত ফরাসী অভিনেত্রী সারা বার্নার্ড এবং এ দেশের তারাসুন্দরী ও সুশীলাবালা সুন্দরী ছিলেন না মোটেই। পাশ্চাত্য দেশের খ্যাতনামা চিত্রতারকাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন, যাঁরা কুরূপা না হ’লেও সুরূপা নন। তবে অভিনেত্রীরা যদি হন একসঙ্গে রূপসুন্দর ও গুণসুন্দর, তাহ’লে বেশী তাড়াতাড়ি তারা প্রভাব বিস্তার করতে পারেন দর্শকদের হৃদয়ের উপরে। এ শ্রেণীর
২৯৭