ছোঁয়ায় হারমোনিয়ামের ভিতর থেকেও জেগে উঠল যেন কোন্ নতুন বাজনা। ছন্দে ছন্দে ইন্দ্রজালের ব্যঞ্জনা। আমাদের বিস্মরের সীমা রইল না।
পরে বীণবাবুর সঙ্গে কলকাতাতেও দেখা হয়েছিল। তাঁর গুরু শ্যামলালবাবুর সঙ্গে দেখা করবার জন্যে আগ্রহ প্রকাশ করলুম। তিনিও আমাকে হ্যারিসন রোডে শ্যামলালবাবুর বাসায় নিয়ে গেলেন। অত্যন্ত অমায়িক প্রিয়দর্শন ভদ্রলোক, চারুকলাকে অবলম্বন ক’রে বিবাহ করতে ভুলে গিয়েছিলেন। তাঁর আস্তানায় এসে ভারতের সর্বশ্রেণীর খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পীরা জটলা করতেন। শ্যামলালবাবুকে দেখলুম বটে, কিন্তু তাঁর বাজনা শোনবার সুযোগ আর সেদিন হ’ল না, পরেও হয় নি।
স্বর্গীয় বন্ধুবর নরেন্দ্রনাথ বসুর বাসভবনে আমাদের একটি ঘরোয়া সঙ্গীতসভা ছিল। সেখানে উচ্চশ্রেণীর গানবাজনার আয়োজন হ’ত প্রতি শনিবারেই। বাংলার বাইরে থেকেও সেরা সেরা গুণীজনকে আমন্ত্রণ ক’রে আনা হ’ত। একদিন এসেছিলেন এক অতুলনীয় শিল্পী, তাঁর নাম সোনে কি সনি বাবু, ঠিক মনে করতে পারছি না, তিনি গয়ানিবাসী ভারতবিখ্যাত হারমোনিয়াম বাদক স্বর্গীয় হনুমানপ্রসাদের পুত্র। তিনিও যা বাজালেন নামেই তা হারমোনিয়াম, কিন্তু শোনালে এমন বেণুবীণার কাকলী যে, মন আমাদের ভেসে গেল সুরের সুরধনীর উচ্ছলিত ধারায় ধারায়। তারপর কেটে গিয়েছে কত বৎসর, কিন্তু আজও সেই অমূর্ত সুরের মায়া খেলা ক’রে বেড়ায় আমার মনের পরতে পরতে।
সাধারণ হারমোনিয়াম যে শিল্পীর সাধনায় একেবারেই অসাধারণ হয়ে ওঠে, আর একদিন তার প্রমাণ পেয়েছিলুম স্বর্গীয় সঙ্গীতাচার্য করমতুল্লা খাঁয়ের ভ্রাতুষ্পুত্র রফিক খাঁয়ের বাজনা শুনে। তাও হচ্ছে অরূপ অপরূপ সুরবাহার।
বছর চারেক আগে সেরাইকেলায় গিয়ে আবার রফিক খাঁয়ের দেখা পেয়েছিলুম। তিনি তখন সেরাইকেলার রাজাসাহেবের বৈতনিক শিল্পী। সেবারে তাঁর একক বাজনা শোনবার সুযোগ পাই নি, অন্যান্য যন্ত্রীর সঙ্গে তিনি হারমোনিয়াম বাজালেন ছউ
৩১২