গানের কথাকে ক্ষুণ্ণ না ক’রেও সুরকে ফুটিয়ে তোলবার নিপুণতা আছে তাঁর অসাধারণ।
“বলবুলিকে তাড়িয়ে দিলে
ফুলবাগানের নতুন মালী”
এবং
“আজকে আমার একতারাতে,
একটি যে নাম বাজিয়ে চলি
কাজলকালো বাদল-রাতে”
আমার এই দুটি গানে সুরসংযোগ ক’রে শচীন্দ্রদেব যেদিন আমাকে শুনিয়ে গেলেন, সেদিন তাঁর এই নতন শক্তির পরিচর পেয়ে আমি বিস্মিত হয়েছিলুম। তারপর
“ও কালো মেঘ, বলতে পারো
কোন দেশেতে থাকো?”
আমার এই গানটিতে সুর দিয়ে শচীন্দ্রদেব যখন হিন্দুস্থান রেকর্ডের মাধ্যমে নিজেই গেয়ে শোনালেন, তখন শ্রোতাদের কাছ থেকে লাভ করেছিলেন প্রচুর সাধুবাদ। সুরের ও গাওয়ার গুণে গানটিই কেবল অতিশয় লোকপ্রিয় হয়নি, শচীন্দ্রদেবেরও নাম ফিরতে লাগল সঙ্গীতরসিকদের মুখে মুখে।
আধুনিক কাব্যগীতিতে সুরসংযোগ করবার পদ্ধতিটি শচীন্দ্রদেব দক্ষতার সঙ্গে আয়ত্তে আনতে পেরেছেন। আগে বাঁধা সুরের কাঠামোর উপরে যে কোন গানকে বসিয়ে দেওয়া হ’ত। রামপ্রসাদী সুর হচ্ছে এরকম কিন্তু তা সংযোগ করা হয় রামপ্রসাদের যে কোন গানের কথার সঙ্গে এবং সে সব গান ভক্তিরসপ্রধান ব’লে শুনতে বেখাপ্পা হয় না। কিন্তু সাধারণ প্রেমের গানে সে সুর কেবল অচল হবে না, হবে রীতিমত হাস্যকর। ওস্তাদদের আমি গম্ভীর বাঁধাসুর বসিয়ে গম্ভীরভাবে এমনি অনেক হাস্যকর গান গাইতে শুনেছি। উচ্চতর সঙ্গীতের সেকেলে আসরে কথার দৈন্যকে আমলে না এনে সরের প্রাধান্য দেখেই সবাই ধন্য ধন্য রব ক’রে ওঠে। রবীন্দ্রনাথ নিজেই এই শ্রেণীর একটি হিন্দী গান উদাহরণরূপে উদ্ধার
৩১৮