কি ৩২ সালের কথা। আমি তখন আনন্দবাজারের নাট্য-বিভাগের ভার গ্রহণ করেছি।
প্রফুল্লবাবু একদিন বললেন, “হেমেন্দ্রবাবু, দোলযাত্রার জন্যে আনন্দবাজারের একটি বিশেষ সংখ্যা বেরুবে। অবনীন্দ্রনাথের একটি লেখা চাই। আপনার সঙ্গে তো তাঁর আলাপ আছে.. আমাকে একদিন তাঁর কাছে নিয়ে যাবেন?”
বুললুম, “বেশ তো, কাল সকালেই চলুন।”
পরদিন যথাসময়ে অবনীন্দ্রনাথের বাড়ীতে গিয়ে দেখলুম, বাগানের দিকে মুখ ক’রে তিনি ব’সে আছেন একলা।
তাঁর সঙ্গে প্রফুল্লবাবুকে পরিচিত করবার জন্যে বললুম, “ইনি দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে আসছেন।”
অবনীন্দ্রনাথ সুধোলেন, “সে আবার কোন্ কাগজ?”
প্রফুল্ল্বাবু যেন আকাশ থেকে পড়লেন। সবিস্ময়ে বললেন “আপনি আনন্দবাজারের নাম শোনেন নি?”
অবনীন্দ্রনাথ মাথা নেড়ে বললেন, “না। খবরের কাগজ আমি পড়ি না।”
প্রফুল্লবাবু, দ'মে গিয়ে একেবারে নির্বাক।
আমি বললুম, “আনন্দবাজারের দোল-সংখ্যার জন্যে উনি আপনার একটি লেখা চাইতে এসেছেন।”
অবনীন্দ্রনাথ বললেন, “বেশ, লেখা আমি দেব।”
অবনীন্দ্রনাথ মজার মানুষ। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ীতে আগে খুব ঘটা ক’রে মাঘোৎসব হ’ত। বিশেষ ক’রে জ’মে উঠত ব্রহ্মসঙ্গীতের আসর। রবীন্দ্রনাথ বহু সঙ্গীত রচনা করতেন। সেই সব গান শোনবার জন্যে যাঁরা ব্রাহ্ম নন তাঁরাও সেখানে গিয়ে সৃষ্টি করতেন বিপুল জনতা। নিমন্ত্রিতদের জন্যে জলখাবারেরও ব্যবস্থা থাকত। এখনকার ব্যবস্থার কথা জানি না। একবার আমার বড় ছেলে (এখন ফটবল খেলার মাঠে রেফারি অলক রায় নামে সুপরিচিত) আবদার ধরলে, আমার সঙ্গে ঠকুরবাড়ীর মাঘোৎসব দেখতে যাবে। তাকে নিয়ে গেলুম। বাইরেকার প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে-
২১