পাতা:এখন যাঁদের দেখছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্যর যদুনাথ সরকার

ইতিহাস-চর্চার ভিতর দিয়ে। রাজসাহী জেলায় ১৮৭০ খৃষ্টাব্দে তাঁর জন্ম। বাইশ বৎসর বয়সে প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে তিনি ইংরেজী সাহিত্যে এম–এ পরীক্ষা দেন এবং সর্বপ্রথম স্থান অধিকার ক’রে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। লাভ করেন সুবর্ণ পদক ও বৃত্তি। তারপর প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ ক’রে কলকাতায়, পাটনায়, বেনারসে ও কটকে বিভিন্ন কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯২৪ খৃষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস-চ্যান্সেলারের পদে অধিষ্ঠিত হন।

 অধ্যাপনার সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকে ঐতিহাসিক সাধনা। ছাত্রজীবন সাঙ্গ ক’রেই সর্বপ্রথমে রচনা করেন টিপু সুলতান সম্বন্ধে ঐতিহাসিক প্রবন্ধ। বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর আরো অনেক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। তাঁর সর্বপ্রথম স্মরণীয় দান হচ্ছে পাঁচ খণ্ডে বিভক্ত “ঔরংজেবের ইতিহাস”। এর মধ্যে বর্ণিত হয়েছে সাজাহানের অর্ধেক রাজত্বকালের ও ঔরংজেবের সমগ্র জীবনকালের কথা। প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ডে আছে সাজাহানের রাজত্বকাল ও উত্তরাধিকারের জন্যে যুদ্ধ। তৃতীয় খণ্ডে বর্ণিত হয়েছে ১৬৫৮ থেকে ১৬৮১ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত উত্তর ভারতের কথা। চতুর্থ খণ্ডে বর্ণিত হয়েছে ১৬৪৪ থেকে ১৬৮৯ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতের কথা। পঞ্চম খণ্ড ঔরংজেবের শেষজীবন নিয়ে রচিত হয়। ঐ গ্রন্থ পাঠ ক’রে ঐতিহাসিক বেভারিজ সাহেব তাঁকে “বাঙালী গিবন” ব’লে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি “শিবাজী ও তাঁর যুগ” রচনা ক’রে পেয়েছিলেন বোম্বাইয়ের রয়েল এসিয়াটিক সোসাইটি থেকে স্যর জেমস ক্যাম্পবেল সুবর্ণ পদক। “মোগল সাম্রাজ্যের নিম্নগতি ও পতন” হচ্ছে তাঁর আর একখানি বিরাট গ্রন্থ। এছাড়া তিনি আরো কয়েকখানি উপভোগ্য গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়েছে আরভিনের “লেটার মোগলস” (দই খণ্ড), “হিষ্ট্রি অব বেঙ্গল” (দ্বিতীয় খণ্ড) ও “আইন-ই-আকবরি”। তাঁর রচিত বাংলা প্রবন্ধও আছে, তবে সংখ্যায় সেগুলি বেশী নয়। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ইংরেজীতে তিনি রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি রচনা ভাষান্তরিত করেছেন। তাঁর ইংরেজী রচনা সমালোচকদের প্রশংসা পেয়েছে। আজ

২৯