অমূর্তকে, দৃষ্টান্তস্বরূপ পূর্বকথিত “বাংলায় দুর্ভিক্ষ” ছবিখানির উল্লেখ করতে পারি। ওর মধ্যে চিন্তাশীলতা থাকতে পারে, কিন্তু জনসাধারণ অমূর্ত শিল্প নিয়ে মস্তক ঘর্মাক্ত করতে প্রস্তুত নয়। বহু শিক্ষিত ব্যক্তি আমার বাড়ীতে তাঁর আঁকা চিত্রাবলী দেখে সেগুলির সার্থকতা সম্বন্ধে প্রচুর সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আমি সাধ্যমত তাঁদের বোঝাবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে চেষ্টা সফল হয়েছে ব’লে মনে হয় না। সেই জন্যেই বহুকাল পর্যন্ত তিনি অর্থকর লোকপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেন নি।
তিনি আমার দীর্ঘকালের বন্ধু, তাঁকে জানি ঘনিষ্ঠভাবেই। সময়ে সময়ে তাঁকে ভোগ করতে হয়েছে দারুণ অর্থকষ্ট। দারিদ্র্য অপমানকর নয় বটে, কিন্তু বহু শিল্পীর পক্ষেই মারাত্মক। শিল্পী যামিনী রায় বিনা অভিযোগে মৌনমুখে এই দারিদ্র্য-জ্বালা সহ্য করেছেন, তবু নিজের পদ্ধতি ছেড়ে অন্য কোন লোকপ্রিয় পদ্ধতি গ্রহণ করেন নি, কলালক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেয়েই পরিতুষ্ট ছিলেন। অবশেষে জয়লাভ করেছে প্রতিভাই। যে লক্ষ্মীদেবীর হাতে থাকে ঝাঁপি আর পায়ের তলায় থাকে পেচক, অবশেষে তাঁরও মুখ হয়েছে প্রসন্ন।
৫২