শিশিরকুমারের নাট্যসাধনা
১৯২১ খৃষ্টাব্দ। মনোমোহন থিয়েটারে, ষ্টার থিয়েটারে ও মিনার্ভা থিয়েটারে যথাক্রমে অভিনীত হচ্ছে “হিন্দুবীর”, “অযোধ্যার বেগম” ও “নাদির সাহ” প্রভৃতি ঐতিহাসিক নাটক। কি ইতিহাসের দিক দিয়ে এবং কি নাটকত্বের দিক দিয়ে এ নাটক তিনখানি আদৌ উল্লেখযোগ্য ছিল না—সেই থোড় বড়ি খাড়া আর খাড়া বড়ি থোড়। তবে প্রধানতঃ স্বর্গীয়া তারাসুন্দরীর অপূর্ব নাট্যনৈপুণ্যের গুণে “অযোধ্যার বেগম” যথেষ্ট পরিমাণেই রসিক দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পেরেছিল।
পণ্ডিত ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদও ঐতিহাসিক নাটকের চাহিদা আছে দেখে একখানি নাটক রচনা করেছিলেন— “আলমগীর"। এ পালাটির মধ্যে পূর্বোক্ত তিনখানি নাটকের চেয়ে উচ্চতর শ্রেণীর ভাব, ভাষা, চরিত্র-চিত্রণ ও অবস্থা সঙ্কট (situation) থাকলেও ক্ষীরোদপ্রসাদের নাটকাবলীর মধ্যে এখানি উচ্চাসন দাবি করতে পারে না। যতদূর জানি, পালাটি তখনকার কোন রঙ্গালয়ে পঠিত হয়েছিল, কিন্তু গৃহীত হয় নি। নির্বাচকরা তার মধ্যে কোন সম্ভাব্যতা আবিষ্কার করতে পারেন নি।
এই সময়ে ম্যাডানরা বেঙ্গলী থিয়েট্রিক্যাল কোম্পানী খুলে পরদেশীয় আগা হাসারকে অবলম্বন করে “অপরাধী কে?” প্রভৃতি পালা বা বেলেখেলা দেখিয়ে বাঙালীকে ভোলাতে না পেরে হাবুডুব খেয়ে থই খুঁজে পাচ্ছিলেন না। উপায় না দেখে তাঁরা (হয়তো মরিয়া হয়েই) প্রবৃত্ত হলেন নতুন পরীক্ষায়। দৃষ্টিপাত করলেন সৌখীন নাট্যজগতের দিকে—যেখানকার নটনায়ক ছিলেন অধ্যাপক শিশিরকুমার ভাদুড়ী। তাঁদের আহবানে সাধারণ রঙ্গালয়ে এসে নবীন অধ্যাপক শিশিরকুমার প্রথমেই নির্বাচন করলেন প্রাক্তন অধ্যাপক ক্ষীরোদপ্রসাদের “আলমগীর” নাটক। নাট্যবোদ্ধা শিশিরকুমারের
৮৫