পাতা:এব্রাহাম লিঙ্কনের বক্তৃতাবলী.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম জীবনের কথা রাজনৈতিক বিষয়গুলি সম্পর্কে ১৮৩৯ সালে ত্ৰিশবৎসর বয়সেই লিঙ্কন ভঁৰ্তাহার রাষ্ট্রের একজন খ্যাতিমান রাজনৈতিক নেতারূপে পরিচিত হন। ঐ বৎসর ডিসেম্বর মাসে শুশ্ৰীং ফিল্ডে প্রতিনিধিসভা ভবনে তিনি সমসাময়িক রাজনৈতিক সমস্যাগুলি সম্পর্কে একটি ভাষণ দেন। ঐ বক্তৃতাটিতে দলীয় গোঁড়ামির বিশেষ পরিচয় রহিয়াছে কারণ লিঙ্কন তখন হুইগ (Whig) দলের একজন গোড়া সমর্থক। সেই যুগের এই দলটির অস্তিত্ব বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্টে লোপ পাইয়াছে। কিন্তু তথাপি ঐ বক্তৃতাটিতে তাহার স্বাভাবিক নীতিনিষ্ঠভার পরিচয় পাওয়া যায়। বক্তৃতাটির উপসংহারে বলা হয় : মিঃ ল্যাম্বৰ্ণ বিভিন্ন রাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত বিগত নিৰ্বাচনের উল্লেখ করিয়া ফলাফল বিশ্লেষণ করতঃ সুনিশ্চিত ভবিষ্যদ্বাণী করিয়াছেন যে, ইউনিয়নের অন্তর্গত প্ৰত্যেকটি রাষ্ট্রই আগামী প্রেসিডেণ্ট নির্বাচনে মিং ভ্যান বুরেন (Van Buren) কে ভোট দিবেন। ঐ যুক্তি তিনি ভীরু এবং দুবৃত্তিদের দেখাইতে পারেন। কিন্তু স্বাধীন এবং সাহসী নাগরিকগণ ইহাতে বিচলিত হইবেন। না । ইহা সত্য হইতে পারে ; যদি তাহাই হয়, তবে হউক। অনেক স্বাধীন দেশ তাহাদের স্বাধীনতা হারাইয়াছে ; আমাদের দেশও স্বাধীনতা হারাইতে পারে । কিন্তু যদি তাহার স্বাধীনতা সত্যই ক্ষুন্ন হয় তবে যেন আমি সকলের শেষে তাহাকে পরিত্যাগ করিয়াছিলাম। এই চিন্তায় গাবিত না হইয়া, এই ভাবিয়া গৰ্ব অনুভব করি যে আমি কখনও তাহাকে পরিত্যাগ করি নাই । আমি জানি যে ওয়াশিংটনে যে প্ৰকাণ্ড আগ্নেয়গিরি পাপাত্মারা জ্বালাইয়া রাখিয়াছে তাহা হইতে রাজনৈতিক দুনীতির লাভ বিস্তৃত এবং গভীর খাতে প্রবলবেগে নিৰ্গত হইয়া ভয়াবহ গতিবেগে এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্ৰ দেশকে আচ্ছন্ন করিতেছে—উহা যেন কোন সবুজ চিহ্ন বা জীবন্ত পদার্থকে অক্ষত রাখিবে না। ইহার বক্ষে পাপাত্মাদিগের সন্ততিবর্গ নারকীয় উল্লাসে দানবের ন্যায় নৃত্য করিয়া, যাহারা ইহার ধ্বংসাত্মক গতিকে প্রতিহত করিতে সাহসী হইয়াছে, তাহদের চেষ্টার নিম্বফলতার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া পৈশাচিক উল্লাসে তাহাদিগকে উপহাস করিতেছে। এই সকল জানিয়া আমি অস্বীকার করিতে পারি না যে সব কিছুই ধ্বংস হইতে পারে। ইহার বেগে আমিও ভাঙ্গিয়া পড়িতে পারি ; কিন্তু তবুও আমি নতি স্বীকার করিব না। যে নীতি ন্যায়ের উপর অধিষ্ঠিত বলিয়া আমরা বিশ্বাস করি, সংগ্রামে পতন হইতে পারে এই ভাবিয়া আমি তাহা হইতে বিচু্যত হইব না |