এব্রাহাম লিঙ্কনের বক্তৃতাবলী যাহাতে আমরা এভাবে কাজ করিতে পারি। সেজন্য বিপজনক স্থানগুলি জানা এবং সে সম্পর্কে আলোচনা করা প্রয়োজন । কুপার ইনষ্টিটিউটে ভাষণ লিঙ্কন দাসদের মুক্তিদান করিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হইতে কলঙ্কজনক দাস প্রথার বিলোপ সাধন দ্বারা ইতিহাসে “মহান মুক্তিদাতা” হিসাবে সুপরিচিত হইলেও, গৃহযুদ্ধের পূর্ববর্তী বৎসরগুলিতে ভঁাহার লক্ষ্য ছিল সরকারী বিধান মারফত দাসপ্রথার প্রত্যক্ষ অবসান অপেক্ষা মানবিক সভ্যতার অগ্ৰগতি মারফত তাহার ক্রম অবলুপ্তি ঘটান। ইহার পিছনে এই আশা ছিল যে দাস রাষ্ট্রগুলি অনিচ্ছাসত্বে হইলেও এই কাৰ্যক্রম গ্ৰহণ করিবে এবং তদ্বারা ইউনিয়ন রক্ষা পাইবে। তথাপি দাস প্রথার নৈতিকতা সম্পর্কে তঁহার উদাত্ত কণ্ঠ সমগ্ৰ দেশৰTাপী ছড়াইয়া পড়ে। একটি বক্তৃতা বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে ; তিনি নিউইয়র্কে যখন আসেন তখন কুপার ইনষ্টিটিউটে রিপাবলিকানদের এক সমাবেশে বক্তৃতাটি দেন। ঐ বক্তৃতার শেষে বলা হয় : যদি দাসপ্রথা ন্যায়সঙ্গত হয় তবে তাহার বিরুদ্ধে যত কথা, কাজ, আইন এবং সংবিধান আছে সবই ভুল এবং সেগুলি স্তব্ধ হওয়া উচিত, সেগুলির উচ্ছেদ হওয়া উচিত। যদি উহা ন্যায়সঙ্গত হয় তবে উহার জাতীয়তা—ইহার বিশ্বজনীনতা সম্পর্কে যুক্তিসঙ্গতভাবে আপত্তি তুলিতে পারি না। যদি আমরা ভাবি দাসপ্রথা যথার্থ। তবে তাহারা যাহা চায় আমরা তৎক্ষণাৎ তাহাদিগকে তাহা দিতে পারি ; যদি তাহারা উহা অন্যায় মনে করিত তবে আমরা যাহা চাই তাহারাও অনুরূপভাবে সহজে তাহা দিতে পারিত। এটাকে তাহারা মনে করে ঠিক, আমরা মনে করি ভুল—এখানেই বিরোধের উৎপত্তি। তাহারা উহা ঠিক মনে করিয়া যদি উহার যাথার্থ্য প্রতিষ্ঠা করিতে চাহে তবে তাহাদিগকে দোষ দেওয়া যায় না, কিন্তু আমরা উহাকে অন্যায় জানিয়া কি তাহদের নিকট নতি স্বীকার করিতে পারি ? আমরা আমাদের নিজেদের বিরুদ্ধে, তাহাদের পক্ষে, কি ভোট দিতে পারি ? আমাদের নৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক দায়িত্বের কথা বিবেচনা করিয়া কি আমরা তাহা করিতে পারি ? যদিও আমরা দাসপ্রথা অন্যায় বলিয়া মনে করি, রাষ্ট্রে উহার বাস্তব উপস্থিতির প্ৰয়োজনে আমরা উহাকে স্বস্থানে একা থাকিতে দিতে পারি। কিন্তু আমাদের ভোট দ্বারা
পাতা:এব্রাহাম লিঙ্কনের বক্তৃতাবলী.djvu/৩৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।