প্রেসিডেন্টরূপে কাৰ্যকাল সকলের প্রতি করুণা প্ৰদৰ্শন করিয়া” ইউনিয়নের মধ্যে ফিরাইয়া আনিবার আশা করিতেছিলেন। প্রেসিডেণ্ট পদের জন্য শপথ গ্রহণের এই দ্বিতীয়বারে প্রথমবারের তুলনায় বিস্তুত বক্তৃতা দিবার সুযোগ কম। তখন প্ৰস্তাবিত কাৰ্যসূচীর আংশিকভাবে বিস্তুত বিবরণের প্রয়োজন ছিল। যে মহাযুদ্ধ এখনও জাতির শক্তিকে অভিভূত এবং জাতীয় অভিনিবেশকে সমাবৃত করিয়া রাখিয়াছে গত চার বৎসরে তাহার প্রতিটি বিষয় এবং স্তর সম্পর্কে প্রতিনিয়তই প্রকাশ্য বিবৃতি দিতে হইয়াছে ; ফলে চার বৎসর পর নূতন করিয়া বলিবার আর কিছুই নাই । আমাদের সৈন্যবাহিনীর অগ্ৰগতি—যাহার উপর মুখ্যতঃ অপর সব কিছু নির্ভর করিতেছেসম্পর্কে আমি যতদূর জানি, জনসাধারণও ততদূর জানে, এবং আমার মনে হয় সকলের নিকটই তাহা মোটামুটি সন্তোষজনক এবং উৎসাহজনক । ভবিষ্যত সম্পর্কে উচ্চ আশা লইয়া এ সম্পর্কে কোন ভবিষ্যদ্বাণী করিবার ইচ্ছা নাই । চার বৎসর পূর্বে এই সময়ে সকলের মনেই আসন্ন গৃহযুদ্ধের উদ্বেগজনক চিন্তা ছিল । সকলেই তাহাতে ভীত হইয়াছিলেন এবং সকলেই তাহা এড়াইবার জন্য উদ্বিগ্ন ছিলেন । এই স্থান হইতে যখন উদ্বোধনী বক্তৃতা দেওয়া হইতেছিল–– যাহার মূল বক্তব্য ছিল যুদ্ধ ব্যতিরেকে ইউনিয়নকে রক্ষা করা—সেই সময় এই নগরীতে বিদ্রোহী চরের চেষ্টা করিতেছিল যুদ্ধ ব্যতিরেকে কীরূপে ইহাকে ধ্বংস করা যায় । তাহারা ইউনিয়নকে ভাঙ্গিয়া দিতে চাহিয়াছিল এবং তাহার পর বিভক্ত সম্পদ ভাগ করিবার জন্য আলোচনা করিতে চাহিতেছিল । উভয় পক্ষই যুদ্ধের নিন্দ করিতেছিল – কিন্তু একপক্ষ জাতিকে বাঁচান অপেক্ষ যুদ্ধের প্রতিই অধিকতর আগ্ৰহান্বিত ছিল ; অপর পক্ষের অভিমত ছিল জাতিকে ধ্বংস হইতে রক্ষা করিবার জন্য প্রয়োজন হইলে যুদ্ধের আহবান পর্যন্ত গ্ৰহণ করা হইবে। ফলে যুদ্ধ আরম্ভ হয়। সমগ্র জনসংখ্যার এক অষ্টমাংশ কৃষ্ণকায় ক্রীতদাস — ইহারা ইউনিয়নের সর্বত্র ছড়াইয়া না থাকিয়া দক্ষিণাংশে মোটামুটি ভাবে সমবেত আছে। এই সকল ক্রীতদাস এক অদ্ভুত এবং ক্ষমতাশালী স্বার্থের সৃষ্টি করিয়াছে। এই স্বার্থকে শক্তিশালী করা, স্থায়ী করা এবং বিস্তৃত করার উদ্দেশ্যেই বিদ্রোহীগণ ইউনিয়নকে প্রয়োজন হইলে যুদ্ধ করিয়াও— ভাঙ্গিয়া দিতে চাহিয়াছিল। অপরপক্ষে সরকার ইহার ভৌগলিক সম্প্রসারণ রোধ ব্যতীত আর কিছু করিবার অধিকারই দাবী করেন নাই। যুদ্ধ যে এরূপ আকার ধারণ করিবে বা এতদিন স্থায়ী হইবে কোন পক্ষই তাহা ভাবেন নাই | সংঘর্ষের অবসানের সহিত, এমন কি তাহার পূর্বেও যে সংঘর্ষের কারণ লোপ পাইতে পারে তাহা কোন পক্ষই আশা করেন নাই। প্রত্যেক পক্ষই সহজতর জয়ের পথ চাহিয়াছিলেন – বুঝিয়াছিলেন সে জয় মৌলিক বা চমকপ্ৰদ হইবে না। উভয় পক্ষ একই বাইবেল পড়েন, একই ভগবানের নিকট প্রার্থনা জানান, এবং
পাতা:এব্রাহাম লিঙ্কনের বক্তৃতাবলী.djvu/৬০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।