পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হলো, লোকটা যন্ত্রনায় একটুখানিও মুখ বেঁকালো না···হাসতে হাসতে এক পুরু চামড়া খুলে ফেল্লো!

 দরকার হলে তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজের দাঁত পর্যন্ত খুলে ফেলে সামনে রেখে দেয়। শুধু কি দাঁত, এক একটা চোখও তারা হাসতে হাসতে খুলে সামনে রেখে দেয়, আবার দরকার হলে লাগিয়ে নেয়। কি সাংঘাতিক লোক ওরা!

 না, তাদের কোন ওঝাই আজ পর্যন্ত এ-রকম যাদু দেখাতে পারে নি। এ-রকম যাদু-শক্তি তাদের কোন ওঝারই নেই। ভাবতে ভাবতে ঘৃণার পরিবর্তে এক সভয় শ্রদ্ধা তার মনে জেগে উঠতে থাকে···

 সূর্য তখন ঠিক মাঝ-আকাশে এসে দাঁড়িয়েছে। যথারীতি সে-সংবাদ ঘোষণা ক’রে ডেকে উঠে কালো পাখীর দল। সমস্ত প্রকৃতি রোদে ঝিম্ হ’য়ে নীথর পড়ে আছে। যেন সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। সব কিছুই ঘুমিয়ে পড়েছে। লম্বা—শীষ-ওয়ালা ঘন ঘাসের বন নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে, এতটুকু বাতাসের চিহ্ন তাদের অঙ্গে ধরা পড়ে না। শুধু তিনবার মাত্র, ঠিক এমনি দুপুরের সময় রোজ কোন্ রহস্যলোক থেকে আসে তিন ঝলক দমকা হাওয়া, দুলে উঠে ঘাসের বন, তারপর আবার নিশ্চল নিশ্চুপ! দূরে ধোঁয়ার কুণ্ডলীকে যেমন মনে হয় স্থির অচঞ্চল, তেমনি স্থির অচঞ্চল দাঁড়িয়ে আছে তূলো-গাছগুলো······একটা পাতাও ভুলে যেন নড়ে না।

৩১