পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ঠিক তারই লিংঘার মতন আওয়াজ দূর থেকে তার কাছে বাতাসে গড়িয়ে গড়িয়ে আসতে লাগলো, তার আহ্বানের প্রত্যুত্তরে। তারা শুনতে পেয়েছে, তারা সাড়া দিয়েছে। বাতোয়ালা সেই শব্দের অরণ্যের মধ্যে প্রত্যেক শব্দটাকে আলাদা বেছে নিতে পারে, কোন শব্দটা ক্ষীণ মৃদু, কোন শব্দটা যেন কুণ্ঠিত, কোনটা যেন অনিশ্চিত, কোনটা যেন স্পষ্ট, উল্লসিত···এক কাগা থেকে আর এক কাগায় তার প্রতিধ্বনি ছড়িয়ে পড়ে, এমনি তীব্র আর প্রবল। এক নিমেষের মধ্যে অদৃশ্য দূর-দূরান্তর প্রাণ–সজীব হয়ে উঠে।

 বাতোয়ালার আমন্ত্রণ-ধ্বনির প্রত্যুত্তরে দূর-দূরান্তর গ্রাম থেকে শব্দের সাহায্যে তারা বলে পাঠালো, আমরা শুনেছি···আমরা শুনেছি তোমার ডাক···আমরা সবাই সজাগ হয়ে আছি···বল···কি বলতে চাও? কথা বল!

 দু’বার দূর-দিগন্ত থেকে ঠিক একই রকমের শব্দের তরঙ্গ ভেসে এল। তাদের শেষ আওয়াজটুকু মিলিয়ে গেলে বাতোয়ালা আবার বলতে শুরু করলো। আবার বেজে উঠলো তার লিংঘা।

 প্রথমে বাতোয়ালা ধীরে সুস্থে নিজেদের ছোটখাটো সুখ–দুঃখের কথা জানায়···লিংঘার আওয়াজে থাকে না কোন জোর। প্রতিদিনের সেই একঘেয়ে জীবনের ক্লান্তি আর অবসাদের কথা, নির্জন জীবনের অভ্যস্ত শ্রান্তি···কোন আনন্দের

৩৩

 বা—৩