পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হয়ে আসতে থাকে···দূরে কোথাও শেষ শকুনি আকাশ থেকে নেমে শেষ চীৎকারে অরণ্যের অন্ধকারে অদৃশ্য হয়ে যায়।

 গ্রামের মাথার ওপর ধীরে নেমে আসে কুয়াশার অবগুণ্ঠন।

 সূর্য ডুবে যায়।

 মানুষের সঙ্গে সঙ্গে ছাগল, হাঁস, মুরগীর দল যে-যার আশ্রয়ে ফিরে আসে আবার।

 আকাশ জুড়ে এল পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘ। সে-মেঘের আড়ালে হারিয়ে গেল রক্ত সূর্য-যেন একটা পরিপূর্ণ প্রস্ফুটিত আফ্রিকার রক্ত-অরণ্য-পুষ্প। মেঘের আড়াল ভেদ করে তীরের মতন দেখা যায় শুধু তার কিরণের ছটা। তাকে তখন গ্রাস করে নিয়েছে কুমীরের মতন অন্ধকার, মহাশূন্য।

 ধীরে ধীরে মহাশূন্যের বুকে একটু একটু করে ফিকে হয়ে আসে রক্ত-আলোকের ছটা। ক্রমশ রক্তহীন বিবর্ণ হয়ে তারা মিশে যায় আকাশের সঙ্গে··· হারিয়ে যায় নিশ্চিহ্ন হয়ে নিঃসীম মহাশূন্যতায়। অন্ধকার আকাশ ঘোষণা করে সূর্যের মৃত্যু। প্রতিদিন আকাশে এইভাবে মৃত্যু ঘটে প্রতিদিনের সূর্যের। তার অন্তিম মুহূর্তের মৃত্যু-বেদনার ওপর নেমে আসে সুগম্ভীর নীরবতা। সে-নীরবতা দেখেছে শত লক্ষ সূর্যের দৈনন্দিন মৃত্যু। অবর্ণনীয় তার সুবিশাল মৌনতা।

 ম্লান বিবর্ণ আকাশে বেদনার প্রদীপ হাতে মৌন-বিষাদে একে একে দেখা দেয় তারকার দল। অন্ধকারের একাধিপত্যে

৪৪