পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এতই হাসতে থাকে যে, দূরের একটা আওয়াজ তাদের কানেই এসে পৌঁছয় না।

 বাতোয়ালা তখন ‘কেনে’তে টই-টুম্বুর। নেশায় দুই চোখ লাল হয়ে উঠেছে। উঠে দাঁড়িয়ে চীৎকার করে ওঠে, হয়, তোমরা সবাই কুকুরের বাচ্ছা, না হয়, তোমরা আমার চেয়ে ঢের বেশী মদ খেয়েছো। আমি জানতে চাই, তোমরা মানুষ কি না? মানুষের বাচ্ছা কি না? তোমাদের ছেলেবেলায় কি দেবতার নামে ওঝারা তোমাদের লিঙ্গচ্ছেদ করে নি? আলবৎ করেছে! তবে? আমার কথা হচ্ছে, আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, শাদা চামড়াকে কিছুতেই ভুলবো না!

 নেশার প্রেরণায় বাতোয়ালার মনের বাঁধন খুলে যায়। সে বলতে সুরু করে,—আমার মনে আছে, একদিন নিউবাংগুই নদীর ধারে, বেসোকেমো আর কেমো-আউদার মাঝখানে বিরাট জায়গায় ম্-বিস্‌রা কি সুখে, কি শান্তিতে বাস করতো···তারপর যেই এল শাদা লোকগুলো, অমনি ঘর-বাড়ী ছেড়ে, বাপ-পিতামোহের ভিটে ছেড়ে দলে দলে আমাদের সরে পালিয়ে আসতে হল; সঙ্গে মুরগী, ছাগল, হাঁড়ি-কুঁড়ি, ঠাকুর-দেবতা, ছেলেপুলে, স্ত্রীলোক সব নিয়ে পালিয়ে আসতে হল। হাঁ, আমার স্পষ্ট মনে আছে···যদিও তখন আমি বালক মাত্র।

 আমরা সরে এসে ক্রেবেজ শহরের আশে-পাশে এসে বসলাম। কিন্তু সেখানেও এলো বাধা। অনেক হলো লড়াই।

৬৪