পাতা:এরাও মানুষ - নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায় (১৯৫০).pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 “জলের দরে ওরা আমাদের কাছ থেকে রবার কেনে। আজ তিরিশ চাঁদ হয়ে গেল, সেই তিন ফ্রাঙ্কে এক কিলো রবার তারা কিনে চলেছে—আর প্রত্যেক চাঁদে ট্যাক্‌স্ বেড়েই চলেছে—এই সেদিন বলা নেই, কওয়া নেই, কেন তা কেউ জানলো না, বাজার দর কমে একেবারে নেমে গেল—আর ঠিক সেই তালে আমাদের গভর্ণর পাঁচ ফ্রাঙ্ক থেকে ট্যাক্‌স্‌ বাড়িয়ে একেবারে দশ ফ্রাঙ্ক করে দিলো—

 “আমরা শুধু হলাম একতাল মাংস, যা নিংড়ে ট্যাক্‌স্‌ আদায় করা যায়···আমরা হলাম শুধু পশু, ওদের মোট বইবার জন্যে! তার চেয়েও জঘন্য, আমরা হলাম কুকুর! স্রেফ রাস্তার কুকুর! কুকুর আর ঘোড়াকে ওরা যে আদর করে, যত্ন করে, আমরা তার শতভাগের একভাগও পাই না—আমরা শুধু পশু নই, পশুর পশু—তাই একটু একটু করে ওরা আমাদের নিশ্চিহ্ন করে ফেলছে—

 বাতোয়ালা আর বুড়ো সর্দাররা যেখানে বসেছিল, পেছন থেকে একদল লোক সেই দিকে ঠেলে আসতে শুরু করে দিল। সুরার উত্তাপে তাদের খালি গা দিয়ে তখন দরধারায় ঘাম ঝরে পড়ছে।

 বাতোয়ালার বক্তৃতা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে ব্যর্থ-আক্রোশের অভিশাপ-বাণী জেগে উঠলো। কেউ কেউ বাতোয়ালাকে সাবাস্ দিয়ে উঠলো, ঠিক বলেছো, বিলকুল ঠিক!

৭০