পাতা:ঐতিহাসিক উপন্যাস.djvu/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সফল স্বপ্ন।
১৫

সেই বর্ত্ম দ্বারাই কি বিষম বিপাকে পতিত হইতেছে। প্রধান মন্ত্রী আপন মনোগতাব প্রকাশ করিলে পর সরল হৃদয়া রাজপুত্রীও সমুদার ব্যক্ত করিলেন। পরে কিঞ্চিংকালান্তরে কহিলেন “আমি তোমার সহিত মিলিত-জীবন হইয়া যাবজ্জীবন তোমার সুখ-দুঃখ ভাগিনী হইতে অসম্মত নহি, কিন্তু অগ্রে পিতার অনুমতি গ্রহণ করা আবশ্যক, স্ত্রীলোকের পক্ষে স্বামীই প্রধান গুরু, কিন্তু যে কামিনী অনুঢ়াবস্থায় পিতার অসম্মান করে, সে যে গৃহিণী হইয়া স্বামীর বশীভূত হইবে এমত সম্ভাবনা অতি বিরল”। প্রধান মন্ত্রী বলিলেন, আমি এইক্ষণে রাজ-সন্নিধানে চলিলাম, তাহাকে আমাদিগের মানস ব্যক্ত করিয়া বলি। তিনি আমাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেন বটে, তথাপি আভিজাত্যাভিমান মানবগণের অন্তঃকরণে অতি প্রবল বলিয়া শঙ্কা হয়”।

সেই দিনেই রাজা এবং রাজমন্ত্রী উভয়ের ঐ বিষয়ে কথোপকথন হইল। মন্ত্রী স্বীয় মনোগত ব্যক্ত করিলে ভূপাল কিছুমাত্র বিরূপ না হইয়া উত্তর করিলেন, “দেখ জেহীরা আমার একমাত্র সন্তান—এই জীবন-বৃক্ষের একমাত্র পুষ্প, যাহার দ্বারা আমার সংসার কানন আমোদিত এবং অন্তরাত্মা পরিতৃপ্ত হইয়া আছে। অতএব আমার একান্ত বাসনা যে, তাঁহাকে এমন পাত্রসাৎ করি, যাহাতে চিরকাল সুখভাগিনী হইয়া থাকে। অনেক রাজপুত্র এবং কুলীনসন্তান বিবাহার্থী হইয়া তাহার উপাসনা করিয়াছেন, সে কাহাকেও বরমাল্য প্রদানে সম্মত হয় নাই- আমিও এই বিষয়ে তাহার অনভিমত করিতে চাহি না। অতএব তুমি অগ্রে তাহার মত কর তাহা হইলেই আমার সম্মতি পাইবে”। মন্ত্রির উত্তর করিলেন, “মহারাজ! আমি আপনার কন্যার নিকট স্বীয় অভিলাষ প্রকাশ করিয়াছি এবং তিনিও আমাকে স্বামিত্বে বরণ করিতে সম্মতা আছেন; কেবল আপনার অনুমতির অপেক্ষা; এক্ষণে আপন- কার অনুকূলতার প্রতি আমার যাবজ্জীবনের সুখ দুঃখ নির্ভর করিতেছে”। রাজা শুনিয়া হৃষ্টচিত্তে উত্তর করিলেন “যদি তুমি জেহীরার সম্মতিলাভ করিয়া থাক, তবে আর আমার কোন প্রতিবন্ধকতা নাই, আমি এই দণ্ডেই অনুমতি দিতেছি, যে পরম পুরুষ মসুজগণের মধ্যে উদ্বাহ সংস্কার