কথা সপ্রমাণ করিলেন। কিন্তু গিরিতলস্থ নিবিড় অন্ধকার, নক্ষত্রগণের মৃদুল-জ্যোতি দ্বারা ভেদ হইবার নহে, অতএব পথিকেরা অতি সাবধানে পাদবিক্ষেপ করত ক্রমশঃ অগ্রসর হইতে লাগিলেন। বিশেষত তাহাদিগের মধ্যস্থ দিব্যগঠন ও বহুমূল্য কৌশেয় বস্ত্রাবৃত যে শিবিকা ছিল, তদ্বাহকেরা,ঐ বন্ধুর পথে পাছে স্খলিতপদ হয়,এই জন্য সকলে বিলম্ব করিয়া যাইতেছিলেন। শিবিকাবাহকগণের অস্পষ্ট শ পরম্পরা, সমভিব্যাহারী * ভৃত্য ও রক্ষিবর্গের পরস্পর কথোপকথন এবং পথ-প্রদর্শকদিগের উচ্চসর, চতুঃপার্শ্বস্থ পৰ্বত মধ্যে প্রতিধ্বনিত হওয়াতে, যেন সহস্র সহস্র ব্যক্তি ব্যঙ্গ করিয়া পথিকদিগের শব্দের অনুকরণ করিতেছে বোধ হইতে লাগিল।
এবস্প্রকারে যাইতে যাইতে পথিকেরা এমনি একটি সংকীর্ণ পথে উপস্থিত হইলেন যে, তাহাতে দুই জনও পাশাপাশি হইয়া গমন করা কঠিন। কোন সময়ে ভূমিকম্প দ্বারা তথায় উভয় পার্শ্বে লোপ সমস্ত ভূগর্ভ হইতে নির্গত হইয়া পথটিকে তাদৃশ অপ্রশস্ত করিয়া থাকিবে। শিবিকা-বাহকেরা সেই স্থানে সর্বাগ্রবর্তী হইয়া অতি যত্নে শিবিকা নির্গমন করিতে লাগিল, এবং আর অর সকলে পশ্চাৎ পশ্চাৎ আসিতে লাগিল। এইরূপে শিবিকা নির্গত হইবামাত্র হঠাৎ তত্বাহকের। কতিপয় অস্ত্রধারী পুরুষ কর্তৃক একেবারে চতুর্দি হইতে আক্রান্ত হইল এবং চকিতের ন্যায় কতিপয় বলবান পুরুষ তাহাদিগের স্কন্ধদেশ হইতে শিবিকা আছি- দান করিয়া অতি ত্বরিত গমনে প্রস্থান করিল। রক্ষিবর্গ ঐ আক্রমণ কোলাহল শুনিয়া শিবিকা রক্ষার্থে দ্রুতবেগে অভিমুখে ধাবমান হইলে তাহাদিগের সম্মুখবর্তী পুরুষ আক্রমণকারী জনৈকে শূলবিদ্ধ হইয়া আর্তনাদপূর্বক প্রাণ পরিত্যাগ করিল। তাহার সেই ভয়ানক মোদন শকে পশ্চাদ্বী সৈচর ভয়ে নিশ্চল হইয়া দণ্ডায়মান হইল, তখন আক্রমণকারীদিগের মধ্যে একজন সুগভীর স্বরে কহিল-“এক পদ মাত্র অগ্রসর হইলেই প্রাণ হারাইবে। যে যেখানে আছি স্থির হইয়া থাক, স্বল্পক্ষণেই নিৰ্বিয়ে গমন করিতে দিব”। কিয়ৎক্ষণ পরে সেই ব্যক্তি হাস্য করত কহিল, “কখন দেখিয়াছি একটিমাত্র শাখামৃগ, ভিমরুল চাকের দ্বার রোধ করিয়া কেমন একটা একটা করিয়া সমুদায় ভৃঙ্গ বিনাশ