“দিল্লীশ্বরে বা জগদীশ্বরে বা” এই কথাটী দ্বারা বাদগাহের পার্থিব বিভবের মাত্র আতিশয্য দেখিয়া জগদীশ্বরের সহিত র্তাহার উপমা দেওয়াতে অত্যন্ত অত্যুক্তি প্রকাশ হয় বলিয়া ইহা অবশু দুষ্য বটে। কিন্তু যে সকল পৰ্য্যাটক তৈমুরলঙ্গবংশীয় বাদসহিদিগের সময়ে দিল্লীনগরের এবং তত্ত্বত্য রাজসভার শোভা নয়ন গোচর করিয়াছিলেন, তাহারা সকলেই মুক্তকণ্ঠে কহিয়াছেন যে, তখন পৃথিবীতে আর কোথাও তাদৃশ ঐশ্বৰ্য্য দর্শন করেন নাই। প্রাচীন রাজধানী শোভা-বিহীন হইয়াছিল বলিয়৷ আরঞ্জেবের পিতা সাজাহান সমুদায় নগরট নূতন নিৰ্ম্মাণ করিয়া দিয়াছিলেন। সাজাহানাবাদ অর্থাৎ নবদিলীর রাজবসু সকল কেমন প্রশস্ত ৰুইয়াছিল !-তন্মধ্যে এবং উভয় দিকে কেমন পরিপাটীরূপ বিন্যস্ত পাদপ, গণ নগরটকে শোভাময় এবং মুখ-প্রদ করিয়াছিল! এক্ষপে দিল্লীর সেই শোভা নাই। তথাপি ইংলওঁীয় সম্রাটুদিগের রাজধানী কলিকাতা নগরী তাহার নিকট অনেক বিষয়ে লজ্জ পায়েন । নগরের প্রাসাদগুলিও কি সুন্দর । বিশেষতঃ শ্বেত মার্বেলে নিৰ্ম্মিত মসীদটীর শোভার প্রশংস৷ সকলেই করিয়া থাকেন। রাজবাটী দুর্লঙ্ঘ্য-প্রাকার বেষ্টিত—এবং বহুমূল্য মার্বেল প্রস্তরে অতি পরিপাটীরূপে নিৰ্ম্মিত। মুসলমানেরা যে হৰ্ম্ম্যশিল্প বিদ্যায় অত্যন্ত পারদর্শী হইয়াছিল তাহার এই প্রমাণ যে, তাহাদিগের নিৰ্ম্মিত অট্টালিকা সকলের খোদকতা কার্যের আধিক্য, তথাপি ভ্ৰমৃবর্গের মনে অদ্ভুতরসের বই অন্য রসের উদয় হয় না। কোন স্থবিজ্ঞ পর্যাটক কহিয়াছেন যে, মুসলমানদিগের নিৰ্ম্মাণ সকলে জহুরির ন্যায় স্বল্পকারুতা এবং অমুরের ন্যায় অতিমানুষত্ব প্রতীয়মান করে। বিশেষতঃ ঐ সাজাহান ভূপাল কর্তৃক নিৰ্ম্মিত আগ্র নগরস্থিত জগদ্বিখ্যাত তাজমহল অট্রাণিক ঐরূপ নিৰ্ম্মাণ কীৰ্ত্তির অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থল। যেমন নিশাকালীন আকাশ মণ্ডল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র তারকস্তবক খচিত হইয়া মানবগণের অন্তঃকরণে ৰিপুল জানদের আবির্ভাব করে, তাজমহলও সেইরূপ অপূৰ্ব্ব সূক্ষ্ম কারুকার্ধ দ্বারা
পাতা:ঐতিহাসিক উপন্যাস.djvu/৬৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।